কলকাতা: ৫০ নাকি ১০০? ঠিক কত কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, তা হিসাব কষতে হিমশিম খাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। এখনও পর্যন্ত ৭০ কোটি টাকারও বেশি হিসাব পাওয়া গিয়েছে। তবে ইডি আধিকারিকদের বক্তব্য, এটা তো নেহাতই হিমশৈলের চূড়া মাত্র।
রাশি রাশি টাকা। যখন প্রথম বস্তাবন্দি ওই টাকার ছবি সামনে এসেছে, কোনও চিত্রনাট্যের অংশের থেকে কম মনে হয়নি। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে বেনামে সম্পত্তির পরিমাণ ঠিক কত, হিসাব করতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে ইডি আধিকারিকদের।
বিরোধীদের বক্তব্য, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে যে নগদ, বৈদেশিক মুদ্রা ও গয়না পাওয়া গিয়েছে, তা দুর্নীতিরই অংশ। অর্থাৎ শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে যে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে, তার একটা অংশ মাত্র। নিয়োগ দুর্নীতির আর্থিক লেনদেনের লভ্যাংশের টাকায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী নামে বেনামে বিপুল সম্পত্তি কিনেছেন। গত ছ’বছরে নিজের সম্পত্তির পরিমাণ বাড়িয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এমনটাই দাবি করছেন ইডি আধিকারিকরা।
ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, কলকাতার বুকেই নামে বেনামে অসংখ্য ফ্ল্যাট রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। বেলঘরিয়ায় সঙ্গী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে ফ্ল্যাটের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
♦ বীরভূমে রয়েছে ৭টি বাড়ি, ২০ বিঘে জমি।
♦ ইডি জানতে পেরেছে, শান্তিনিকেতনেও ৪ হাজার স্কোয়্যার ফিটের ফ্ল্যাট রয়েছে।
♦ তাহলে হিসাবটা ঠিক কত দাঁড়াচ্ছে? হিসাব কষতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
♦ ডায়মন্ড সিটিতে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা।
♦ ৭৮ লক্ষ টাকার সোনার গয়না, ৫৪ লক্ষ টাকার বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার হয়েছে।
♦ ডায়মন্ড সিটিতে অর্পিতার মোট ৩ টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি টাকা।
♦ বেলঘরিয়াতেও অর্পিতার ২ টি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা।
♦ এছাড়াও শহরতলিতে অর্পিতার আরও বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
♦ শহর ছাড়িয়ে জেলাতেও বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। শান্তিনিকেতনের জামবনি, ফুলডাঙা, প্রান্তিকে বেশ কয়েকটি বাগানবাড়ির হদিশ মিলেছে।
♦ কোপাই যাওয়ার পথেও রয়েছে আরও একটি বাড়ি।
♦ শান্তিনিকেতনে নতুন করে আরও একটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।
♦ ইডি সূত্রে খবর, পার্থর বাড়ি থেকেও বেশ কিছু সম্পত্তির নথি পাওয়া গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, তিনটে ভুয়ো কোম্পানির ডিরেক্টর হিসাবে নাম রয়েছে অর্পিতার। তারও নথি মিলেছে।
♦ হাওড়া, ডোমজুড়, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অর্পিতা ও পার্থর নামে-বেনামে সম্পত্তি রয়েছে বলে ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ১০০ কোটির কাছাকাছি।
♦ জামবুনি, ফুলডাঙা, প্রান্তিক-সহ বিভিন্ন জায়গায় ৭টি বাড়ির হদিশ মিলেছে। বাড়িগুলি কেনা হয়েছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও মোনালিসা দাসের নামে। কোনও বাড়ির দামই এক কোটির কম নয়। ফলে সেখানেও কম করে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি।
♦ বীরভূমের একটি আবাসনে রয়েছে চার হাজার স্কোয়্যার ফিটের একটি ফ্ল্যাটেরও হদিশ মিলেছে। যার আনুমানিক দাম পাঁচ কোটি।
♦ সোনাঝুরির পিছনে ২০ বিঘা জমি, যার আনুমানিক মূল্য ১০ কোটি।
♦ পিংলায় মন্ত্রীর স্ত্রীর নামে বিশাল স্কুল। জমি কেনা হয় ৪৫ কোটি টাকা নগদে।
তদন্তকারী সংস্থা বলছে, এখনও বহু সম্পত্তির হদিশ পাওয়া বাকি।