কলকাতা : গ্রেফতার হওয়ার পর যখন এসএসকেএম থেকে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন তাঁর মুখে ক্লান্তি আর কষ্টের ছাপ ছিল অনেকটাই স্পষ্ট। বুকে হাত দিয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। মাঝে ৭ দিন কেটে গিয়েছে। শুক্রবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বেশ স্পষ্ট জবাব দিতে শোনা গেল তাঁকে। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টও বলছে, মানসিকভাবে অনেকটাই স্থিতিশীল পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলের সিদ্ধান্ত, মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের পরও তিনি মানসিকভাবে বেশ শক্তই রয়েছেন। কিন্তু ভেঙে পড়েছেন অর্পিতা। তাঁকে শান্ত করতে ঘুমের ইঞ্জেকশন পর্যন্ত দিতে হয়েছে চিকিৎসকদের।
শুক্রবারই জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে পার্থ ও অর্পিতার। চিকিৎসরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে দুজনের মানসিক অবস্থা একেবারে আলাদা। একের পর এক ধাক্কাতেও অবিচল পোড় খাওয়া রাজনীতিক পার্থ। স্নায়ুতন্ত্রের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাঁর ওষুধেও তেমন কোনও বদলের প্রয়োজন পড়েনি। বরং গত ৮ দিনে পার্থ যে ভাবে নিজেকে সামলে নিয়েছেন, তাতে কিছুটা চমকে গিয়েছেন চিকিৎসকেরাও।
অন্যদিকে, পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা শুধু সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই নয়, হাসপাতালের ভিতরেও বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। শুক্রবার তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলাকালীন অঝোরে কেঁদেছেন অর্পিতা। বারবার বলেছেন, আর পারছেন না। এই জেরার প্রক্রিয়ায় আর পেরে উঠছেন না তিনি। তাঁকে শান্ত করতে ঘুমের ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন নার্ভাস ব্রেকডাউন হয়েছে অর্পিতার। মানসিক ধাক্কা সামলে উঠতে পারছেন না তিনি। এই মানসিক অবস্থা তদন্তের অগ্রগতিতে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, জেরার মুখে পার্থ তেমন মুখ না খুললেও অর্পিতাকে প্রশ্ন করে অনেক সূত্রই পাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
এসএসকেএমে চিকিৎসা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল ইডি-র। পরে আদালতের নির্দেশে ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের। বড় কোনও সমস্যা নেই বলেই জানানো হয়েছিল এইমসের তরফে। পরে আদালত নির্দেশ দেয়, ৪৮ ঘণ্টা অন্তর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে পার্থ ও অর্পিতার। সেই মতো জোকা ইএসআই-তে নিয়মিত তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে।