কলকাতা : ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে আদালতে পৌঁছেই আবারও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা পুলিশের গাড়িতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ইডির বিশেষ আদালতে। আদালতে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন ‘কেউ ছাড় পাবে না’। শুধু তাই নয়, পার্থ এ দিন আরও বলেন, ‘সময়ে সব প্রমাণ হবে।’
এ দিন শুনানি শুরু হওয়ার আগে আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। এরপর বিচারক তাঁকে বেরিয়ে যেতে বলেন। সেই সময়েই পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, ‘নো বডি উইল বি স্পেয়ার্ড’ অর্থাৎ কেউ ছাড় পাবে না। সেই সঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘অল উইল বি প্রুভড ইন টাইম’ অর্থাৎ সময়ে সব প্রমাণ হবে। আদালতে দাঁড়িয়ে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রীর এমন মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগে ইডি হেফাজতে থাকাকালীন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ বলেছিলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ কে ষড়যন্ত্র করছে, সে বিষয়টা স্পষ্ট না হলেও এ দিনের মন্তব্যেই সেই একই ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ দিন আদালত কক্ষ থেকে বেরনোর সময় দেহরক্ষীর কাঁধে ভর দিয়ে বেরতে দেখা যায় পার্থকে। তিনি যে অসুস্থ, সে কথাও এদিন জানান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুব্রতর ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও পার্থর ক্ষেত্রে ছবিটা একই রকম নয়। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের একজন প্রথম সারির সৈনিক হলেও তাঁর ক্ষেত্রে দল পাশে দাঁড়ায়নি। দলীয় সব পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে তাঁকে। তাই তার মুখে ষড়যন্ত্রের কথায় কোনও বিশেষ ইঙ্গিত আছে বলেই মনে করেন কেউ কেউ। ঘাসফুল নেতৃত্ব অবশ্য বলেছে, ষড়যন্ত্রের কথা ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বলতে পারতেন পার্থ!
এ দিনের শুনানিতে পার্থর কত সম্পত্তি আর লেনদেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, সেই খতিয়ান দেয় ইডি। তদন্তকারীদের তরফে অনেক তথ্য প্রমাণ সামনে আনা হয়েছে এ দিন। ইডি জানিয়েছে, পার্থ ও অর্পিতার নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৬০। এ ছাড়া ৩০ টি শেল কোম্পানির কথাও জানানো হয়েছে তদন্তকারীদের তরফে।
জীবন বীমা বা এলআইসি সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও এ দিন তুলে ধরেছেন ইডির আইনজীবীরা। জানানো হয়েছে, অর্পিতার জীবন বীমার টাকা পার্থর অ্য়াকাউন্ট থেকে কাটা হয়েছে। সেই মেসেজ এসেছে পার্থর মোবাইলেই। অন্যদিকে, অসুস্থতার কথা বলে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন পার্থর আইনজীবী।