কলকাতা: পয়লা বৈশাখে রাজ্যে প্রথমবার পালিত হল পশ্চিমবঙ্গ দিবস। বাংলায় পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে বেছে নেওয়াকে কেন্দ্র করে অতীতে দীর্ঘ চর্চা হয়েছে। এর আগে ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালিত হয়েছিল রাজভবনে, তাতে কিছুটা আপত্তি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে বেছে নেওয়া হয়েছিল পয়লা বৈশাখ দিনটিকে। এই নিয়ে বিরোধী শিবির থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদদের একাংশ এই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সমালোচনা করেছিলেন। আবার বিশিষ্টজনকে একটি অংশ সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদও জানিয়েছিলেন।
এসবের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাজ্যে প্রথমবার আয়োজিত হল পশ্চিমবঙ্গ দিবস। ১৪৩১ বঙ্গাব্দের সূচনা লগ্ন সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ দিবসের। যেহেতু লোকসভা ভোটের কারণে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর রয়েছে, তাই কোনও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী পশ্চিমবঙ্গ দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। রাজ্য প্রথমবার পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন ঘিরে আজ আবারও সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন বিরোধী রাজনীতিকরা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর স্পষ্ট কথা, ‘ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না।’ তাঁর মতে, ২০ জুনই হল পশ্চিমবঙ্গ দিবস। শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘রাকেশ রোশন যেমন চাঁদের যাননি… ১৫০০ কেজির বাচ্চা যেমন জন্মগ্রহণ করে না… তেমনই ২০ জুন ভারত কেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় আমাদের ভারত-ভুক্তির পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।’
বামেরা যেমন আবার এই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি উভয় শিবিরকেই কটাক্ষ করেছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘বিজেপি যেটা বলছে সেটা বেঠিক। ওটা পশ্চিমবঙ্গ দিবস নয়, ওটা বাংলা বিভাজনের সিদ্ধান্তের দিবস। ওটা বাংলার দুর্গতির দিবস। তাতে আনন্দ পাচ্ছে বিজেপি, প্রতিষ্ঠা দিবস বলছে। আর তৃণমূলকেও বলিহারি… আজ পশ্চিমবঙ্গের যে মানচিত্র, সেটা তৈরি হয়েছিল ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর। সেই ১ নভেম্বরকে দিবস করলে তাও মানে বুঝতাম।’
এদিকে আবার বিজেপি বা বাম, কারও কটাক্ষকেই গুরুত্ব দিতে রাজি নয় তৃণমূল শিবির। যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের বক্তব্য, ‘বিরোধীদের কথা নিয়ে আমরা একটুও ভাবিত নই। যেটা মানুষের ভাবাবেগ, বাঙালিদের ভাবাবেগ, সেটাকে আমি শ্রদ্ধা করি। বিরোধীরা বা বিজেপি যে শ্রদ্ধা করবে না, সেটা তো স্বাভাবিক।’