খাস কলকাতায় শ্বাসকষ্টের রোগীকে ফেরাল ৭ হাসপাতাল, ভোর রাত পর্যন্ত ঘুরেও হল না করোনা পরীক্ষা

সুমন মহাপাত্র |

Apr 18, 2021 | 2:59 PM

সরকারি-বেসরকারি সব দরজা খুলে অসহায় কসবার বাসিন্দা সুপ্রিয়া পালের পরিবার।

খাস কলকাতায় শ্বাসকষ্টের রোগীকে ফেরাল ৭ হাসপাতাল, ভোর রাত পর্যন্ত ঘুরেও হল না করোনা পরীক্ষা
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

কলকাতা: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে কতটা ভেঙে দিয়েছে তার প্রমাণ মিলছে হাসপাতালগুলির দিকে তাকাতেই। নিশুতি রাত পর্যন্ত একের পর এক হাসপাতালে হন্যে দিয়ে মিলল না চিকিৎসা। বেড পাওয়া তো দূরের কথা, উপসর্গ থাকলেও করোনা পরীক্ষাই করল না কোনও হাসপাতাল। সরকারি-বেসরকারি সব দরজা খুলে অসহায় কসবার বাসিন্দা সুপ্রিয়া পালের পরিবার।

গত শুক্রবার থেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন কসবার বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী সুপ্রিয়া পাল। শনিবার তাঁর শারীরিক কষ্ট বাড়ে। তখন স্ত্রীকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যান দিলীপ পাল। সেখানে হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় বে নেই। স্ত্রীর শারীরিক কষ্ট ক্রমেই বাড়ছে। এমতাবস্থায় দিলীপবাবু স্ত্রীকে নিয়ে যান মেডিকা হাসপাতালে। সেখানেও একই হাল। শুনতে হয় বেড নেই। তখন বাইপাসের ডিসান হাসপাতালে যান তাঁরা। সেখানেই বেডের আকাল। ডিসান থেকে এরপর গড়চার একটি নার্সিংহোমে স্ত্রীকে নিয়ে যান দিলীপ পাল। রাত দুটো পর্যন্ত এইভাবে একাধিক হাসপাতালের চক্কর কেটেও সামান্যতম চিকিৎসা পাননি সুপ্রিয়া পাল।

এরপর রবিবার সকালে স্ত্রীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান দিলীপবাবু। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সুপ্রিয়া শ্বাসকষ্টের রোগী তাঁর করোনা পরীক্ষা করা দরকার। তাঁকে এসএসকেএম রেফার করে দেয় ন্যাশনাল মেডিক্য়াল কলেজে। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় বেড নেই। এরপর নিরুপায় হয়ে বেলেঘাটা আইডিতে যান দিলীপবাবু। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় করোনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। তাঁকে রাজ্য সরকারের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। রাজ্য সরকারের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে তাঁকে প্রতিনিধি জানান, পজিটিভ রিপোর্ট না থাকলে কিছু করা যাবে না। তখন দিলীপবাবু পাল্টা জানান, পরীক্ষা করানোর জন্যই তিনি একের পর এক সরকারি হাসপাতাল ঘুরেছেন। কেউ আইসোলেশনে না রেখেই ফিরিয়ে দিয়েছে। তাহলে কি আইসোলেশন ওয়ার্ডে বেড নেই? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়েই ফোন কেটে দেন সরকারি প্রতিনিধি। একে স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি, অন্য দিকে বেড নেই, দ্বৈত সমস্যায় পড়ে আপাতত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছুটেছেন দিলীপবাবু।

আরও পড়ুন: পরিযায়ীদের নিয়ে বিশেষ ভাবনা, করোনা রুখতে ১৪ দফা কৌশল নবান্নের

Next Article