কলকাতা: রাজ্যে স্কুল খোলার দাবিতে আরও একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। এবার একটি সংগঠনের তরফে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার ইসলামিক স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন রাজ্য শাখা এই মামলা দায়ের করে। স্কুল খোলার দাবি নিয়ে এখনও অবধি মোট তিনটি মামলা দায়ের হল। মামলাকারী ইসলামিক স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন এদিন আদালতে আবেদন জানায়, পাড়ায় শিক্ষালয় কোনও সমাধান নয়। স্কুলের তালা খুলেই স্কুল পড়ুয়াদের আগামীকে সুরক্ষিত করতে হবে। স্কুলছুটদের অবিলম্বে স্কুলমুখী করার আবেদন জানানো হয়েছে এই মামলায়।
এখনও অবধি স্কুল খোলার দাবি নিয়ে যে তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে, সবক’টির ক্ষেত্রেই মামলাকারীদের বক্তব্য, শিক্ষা ছেলে মেয়েদের মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকার কোনও অজুহাত দেখিয়ে সেই অধিকার থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখতে পারে না। করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে স্কুল কলেজের গেটে তালা ঝুলিয়ে রেখেছে নবান্ন। অথচ বাকি সবকিছুই খোলা। হাট, মেলা থেকে রেস্তোরাঁ, ক্লাব। বাস, ট্রেনও সবই চলছে। তা হলে কী কারণে স্কুল খোলা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন মামলাকারীদের। মঙ্গলবার আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনটি মামলাই একসঙ্গে শুনবে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে এদিন একটি প্রেস বিবৃতি জারি করে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের তরফে রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, ‘কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন অনিন্দ্যনারায়ণ বিশ্বাসের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করেছি। সমস্ত প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পঠন-পাঠন চালুর দাবির প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার তথা শিক্ষা দফতর সতর্ক রয়েছে। পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলেই পঠন-পাঠন শুরু করা হবে। তার আগে নিচু স্তরের ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ পরিকল্পনার মাধ্যমে পড়ার খানিকটা পরিবেশ তৈরীর উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পঠন-পাঠন শুরুর জোরালো দাবি জানিয়ে এসেছি।’ তিনি জানান, মঙ্গলবার তাঁরা তাঁদের দাবিপত্র মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন।
এদিকে সোমবারই পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্প চালু করেছে শিক্ষা দফতর। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে জানান, সব স্কুলই ধাপে ধাপে খোলা হবে। রাজ্য সরকারও স্কুল খোলার পক্ষে। তবে সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চায় তারা। স্কুল খুলে ফের তা বন্ধ করে দেওয়ার পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেদিকটাই বিবেচনা করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি দেখে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
করোনার দাপাদাপির কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসে যখন দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়, তখন থেকে টানা বন্ধ স্কুল। মাঝে স্কুল খোলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সংক্রমণের কারণে ফের তা বন্ধ রাখা হয়। কিছুদিন আগেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু করা হয়। কিন্তু ফের ওমিক্রন আতঙ্কের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় সেগুলি।