কলকাতা: রবিবারও নৈহাটির বাড়িতে গিয়েছিলেন, সোমবার ফেরেন নাগেরবাজারে। বাড়িতে বলে এসেছিলেন, কিছু দিনের মধ্যেই আবার ফিরবেন। নাগেরবাজারে উঠতি মডেল বিদিশা দে মজুমদারের রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে নাগেরবাজার পুলিশের হাতে উঠে আসছে দুটি তত্ত্ব। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, পেশাগত কারণেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তাঁর বান্ধবীর বয়ানে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তবে নাগেরবাজার থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন, এর আগেও দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বিদিশা। কিন্তু কোন বিষয়ে এতটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি? সেটাই তদন্তসাপেক্ষ।
তদন্তকারীরা বিদিশার মোবাইল ঘেঁটে জানতে পেরেছেন, মঙ্গলবার ভোর চারটে পর্যন্ত ফোনে কথা বলেছেন তিনি। কার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কী বলেছিলেন, সেটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, বান্ধবী দিয়া দাসের সঙ্গে আগের রাতেও হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করে বিদিশা। সেই চ্যাটের স্ক্রিনশট ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন দিয়া। তাতে উঠে আসতে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কের কথা। উঠে আসছে অনুভব বলে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক যুবকের নামও। যিনি পেশায় জিমের প্রশিক্ষক। জানা যাচ্ছে, মেদিনীপুর শহরে দুটি জিমে তাঁর যাতায়াত রয়েছে। তাঁর খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। অনুভব আদৌ ওই দুটি জিমের মালিক কিনা, সেটাও স্পষ্ট নয়। হোয়াটস অ্যাপ চ্যাটের পরতে পরতে বিদিশা তাঁর সম্পর্ক নিয়ে অবসাদের কথা জানিয়েছিলেন। ওই যুবকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
মাস দুয়েক আগেই কাঁকিনাড়ার বাড়ি থেকে নাগেরবাজারের রামগড়ের ভাড়া বাড়িতে আসেন বিদিশা। তিনি স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি মডেলিং করতেন। স্বপ্ন ছিল সুপরিচিত হওয়ায়। বোনকেও জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দু’মাসের মধ্যেই জীবনে এমন কী ঘটল বিদিশার জীবনে, সেটাই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
বুধবার নাগেরবাজারের একটি বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে বিদিশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। তিন পাতার সুইসাইড নোটের পরতে পরতে মানসিক অবসাদের কথা উল্লেখ রয়েছে।ইতিমধ্যেই বিদিশার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ অনেকটা স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।