কলকাতা: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে একের পর এক নৃশংসতার অভিযোগ সামনে আসছে। সোমবার ডামি পুতুল ও পাশবালিশ নিয়ে ৯ অগস্টের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। যাদবপুর মেন হস্টেলে যায় ফরেন্সিক দল। সঙ্গে অ্যাডিশনাল ডিসি বিশ্বজিৎ সরকার ছিলেন। তদন্তকারীরা বিভিন্ন ঘর ঘুরে দেখেন। মূলত তাঁদের নজরে হস্টেলের ৬৫ নম্বর রুম।
হস্টেলের A1 ব্লকের ৬৮ নম্বর ঘরে বাংলা প্রথমবর্ষের ওই ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেই ঘরের পাশাপাশি এদিন ৬৫ নম্বর ঘরটিও ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা। সেই ঘরে কেউ থাকে না। লালবাজার সূত্রে খবর, ৯ অগস্টের রাতে নদিয়ার ওই পড়ুয়া সেই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিবস্ত্র অবস্থায় ওই ঘরে গিয়ে নিজেকে লুকোনোর চেষ্টা করেছিল ওই ছাত্র। যদিও সে সফল হয়নি। তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন, ওই ৬৫ নম্বর ঘরে তার উপর অত্যাচার করা হয়ে থাকতে পারে। এরপর বারান্দা ধরেই A2 ব্লকে পৌঁছয়। কারণ, সেই ব্লকের নীচেই পড়েছিল সে।
ইতিমধ্যেই ছাত্রমৃত্যু ও পুলিশকে হস্টেলে বাধা দেওয়ার ঘটনায় সবমিলিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ১৩ জনের মধ্যে যাদবপুরের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী, সপ্তক কামিল্যা ও সত্যব্রত রায়ের প্রভাব সবথেকে বেশি ছিল বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁরাই মূলত নির্দেশ দিতেন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৯ তারিখ মৃত পড়ুয়া নিজের ৬৮ নম্বর রুমেই ছিল। সেখান থেকে তাকে প্রথমে ১০৪ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিঠি লিখতে চাপ দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এরপর নিয়ে যাওয়া হয় ৬১ নম্বর রুমে। সেখানে গালাগালি শেখানোর পর বলা হয়েছিল জানালার দিকে তাকিয়ে শেখা গালাগাল চিৎকার করে বলতে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সেদিন সন্ধ্যা থেকে এ ঘর ও ঘরে ওই পড়ুয়াকে ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ। ৬১ নম্বর রুম থেকে ৬৮ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওই পড়ুয়াকে। সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর কি বান্ধবী আছে নাকি সে সমকামী? পুলিশ সূত্রে খবর, সেখান থেকে ৭০ নম্বর ঘরে বিবস্ত্র করা হয় হস্টেলে তিনদিন আগে আসা ওই ছাত্রকে। এরপরই ৬৫ নম্বর ঘরে ছুটে গিয়ে দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল সে। তবে বাধা পায়।