কলকাতা: সম্প্রতি পোলিওর জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল মেটিয়াবুরুজের নর্দমায়। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। নিয়মিত প্রচার চালাতে শুরু করে কলকাতা পুরসভা। রবিবার ছিল পোলিওর বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচি (Polio Sub-National Immunisation day)। যে গার্ডেনরিচ-মেটিয়াবুরুজ এলাকায় পোলিওর জীবাণু হাঁফ ধরিয়েছিল, সেখানে এদিন স্বস্তির হাওয়া। গতবারের তুলনায় এবার এখানে অনেকটাই পোলিও নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে বলে কলকাতা পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
সম্প্রতি কলকাতা পুরনিগমের ১৫ নম্বর বোরোর মেটিয়াবুরুজ এলাকায় নর্দমার জলে পোলিওর জীবাণু পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের অনুমান এটি সিডিপিভি টাইপ-১ ভাইরাস। টিকাকরণে বাড়তি নজরদারির পরও কীভাবে ওই এলাকায় পোলিও নমুনা পাওয়া গেল, তা নিয়ে অনুসন্ধানে নামে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন। প্রত্যেক শিশু যাতে পোলিওর টিকা নেয় তার জন্য আবেদন নিবেদন শুরু করেন পুর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তা, আধিকারিকরা। সেই প্রচার সচেতনতায় অনেকটাই কাজ দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরোতে ৯৫৬৫ জন শিশু পোলিওর প্রতিষেধক নিল। যা অন্যান্য বারের তুলনায় অন্তত ১৫-২০ শতাংশ বেশি বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “পোলিও কর্মসূচিতে আমরা মেটিয়াবুরুজ গার্ডেনরিচ এলাকায় প্রচারে বেশি জোর দিচ্ছি। আজ যে পরিমাণ পোলিওর প্রতিষেধক নিতে এসেছে, তা গত কয়েকবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে প্রচারকে সর্বাত্মক করতে হবে। যে কারণে অনেকেই পোলিওর প্রতিষেধক থেকে বাদ থাকছে। তবে আমরাও হাল ছাড়ছি না। শহরকে পোলিওমুক্ত রাখতেই হবে।”
পোলিও রোধে স্বাস্থ্যভবনের বিশেষ রূপরেখা তৈরি হয়েছে। পোলিও হাই-রিস্ক জ়োন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এ রাজ্যের ১০-এর অধিক জেলা। সেই জেলাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালাবে স্বাস্থ্য ভবন। তালিকায় রয়েছে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, বসিরহাট (স্বাস্থ্যজেলা), ডায়মন্ড হারবার (স্বাস্থ্যজেলা), রামপুরহাটে (স্বাস্থ্য জেলা)। ২০১১ সালে হাওড়া জেলায় দু’বছরের এক শিশুর শরীরে পোলিও-র সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ১১ বছরে মেটিয়াবুরুজের ঘটনা। খাস কলকাতায় পোলিও জীবাণুর খোঁজে কার্যত চমকে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও।