Babul Supriyo: ‘কোনটাতে ভাল সওদা, তৃণমূলে নাকি বিজেপিতে’, বাবুলের শিবির বদল নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজনীতিকরা?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Sep 18, 2021 | 4:39 PM

Babul Supriyo in TMC: "বাবুল সুপ্রিয় চুপিচুপি পতাকা নিলেন অভিষেকের কাছে গিয়ে। কয়েকদিন আগে যে সব বলেছেন, এখন তার উল্টো বলতে হবে তাঁকে। নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েছেন এঁরা। রাজননীতিকে যে ব্যবসার আকারে দেখা হচ্ছে, এটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।''

Babul Supriyo: কোনটাতে ভাল সওদা, তৃণমূলে নাকি বিজেপিতে, বাবুলের শিবির বদল নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজনীতিকরা?
ছবি: টুইটার

Follow Us

কলকাতা: শনিবারের দুপুর। আচমকা তৃণমূলের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে ভেসে এল একটি টুইট। তৃণমূলে (TMC) যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তারপর তোপসিয়ার তৃণমূল ভবনে রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাবুল বলেন, “আমি প্রথমেই খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই। আমি রাজনীতি ছাড়ার যে কথা বলেছিলাম, সেটা পুরোপুরি হৃদয় থেকেই বলেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল ৭ বছর পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য আমি যে কাজ করেছি, সেখানে একটা ফুলস্টপ এসে গিয়েছিল। কেন এসেছিল জানি না। এর পেছনে আমি যুক্তিও পাইনি। ৭ বছরের সময় পুরোপুরি ধুলোয় মিশে গিয়েছিল। এটা কোনও প্রতিশোধের রাজনীতি নয়। আমি সুযোগ হিসেবে এটাকে দেখছি।” কিন্তু তাঁর এই ফুলবদল নিয়ে কী বলছে রাজনৈতিক মহল?

‘দেয়ার ইজ নো ফুলস্টপ ইন পলিটিক্স।’ তিনি যে রাজনীতিতে ফেরে এসেছেন তাতে ‘আপ্লুত’ শোনাল জিতেন তিওয়ারিকে (Jitendra Tiwari)। যে পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন শুনে দলের অন্দরে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন, এমনকি জিতেন তিওয়ারিকে নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্যের জন্য দলের তরফে শো-কজ নোটিস-ও পেয়েছেন বাবুল। সময় বদলেছে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েও হেরে গিয়েছেন জিতেন। আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে একুশের বিধানসভা ভোটে টালিগঞ্জ থেকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু আসানসোলের পদ্ম টালিগঞ্জে ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছেন বাবুল।

এদিন সেই বাবুলের আচমকা তৃণমূলে যোগদান নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পি চিদম্বরমকে উদ্ধৃত করেন জিতেন তিওয়ারি। বলেন বাবুল যে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেননি, এটাই ভাল খবর। তবে দিন সাতেক আগে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল বাবুলের। তখন তিনি বুঝতে পারেননি যে তৃণমূলে যাচ্ছেন বাবুল, বলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তবে এই সিদ্ধান্ত ভুল না ঠিক সেটা সময়ই বলবে বলে জানাচ্ছেন তিনি। যদিও রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া বাবুল যে রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হচ্ছেন, এবং সেটা তার বিরোধী শিবির হলেও ভাল সিদ্ধান্ত বলে জানান জিতেন। তাঁর কথায়, একজন ব্যক্তি কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিনিই জানেন। তবে বিজেপির কাছে এটা স্বস্তি নাকি অস্বস্তি সেটা সিনিয়ররা বলবেন।

আর বঙ্গ বিজেপির সিনিয়র নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, “এটা বাবুলবাবুর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে প্রশ্ন এখানেই দাঁড়াচ্ছে যে, তিনি বিজেপির সাংসদ। বিজেপির প্রতীকে দু’ বার সাংসদ হয়েছেন। মন্ত্রীও হয়েছিলেন। এখন তিনি পদত্যাগ করবেন কিনা সেটাই দেখার।” তাহলে কি মুকুল রায়ের মতো বাবুলের বিরুদ্ধেও দলত্যাগ আইন প্রয়োগ করতে পদক্ষেপ করবে বিজেপি? জয়প্রকাশ বলছেন, “না।” তাঁর কথায়, “মুকুল তো তৃণমূলেই ছিলেন, তার পরে বিজেপিতে এসে আবার তৃণমূলে গিয়েছেন। বাবুল সুপ্রিয় রাজনীতির শুরুই করেছেন বিজেপিতে। তিনি এন্টারটেইনমেন্ট জগতের লোক। নিজেই চেয়েছিলেন রাজনীতি থেকে সন্যাস নিতে। কিন্তু এখন তৃণমূলে গেলেন। এটা ব্যক্তিগত মত। শুভেচ্ছা রইল।”

এদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “বাবুল সুপ্রিয় চুপিচুপি পতাকা নিলেন অভিষেকের কাছে গিয়ে। কয়েকদিন আগে যে সব বলেছেন, এখন তার উল্টো বলতে হবে তাঁকে। নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েছেন এঁরা। রাজননীতিকে যে ব্যবসার আকারে দেখা হচ্ছে, এটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। আজ যেটাকে ভুল বললাম, পরের দিন সেটাকে ঠিক বলছি। এই যে কাণ্ডটা চলছে, এটা কেউ ভালভাবে নেবে না। আমি গান করতাম। আমি চলে গেলাম দল করতে। তার পর মন্ত্রী হলাম। সেই মন্ত্রিত্ব যেতেই আবার একটা দলে যোগ দিলাম। এটা থেকেই পরিষ্কার এঁরা রাজনীতিকে স্বার্থের জিনিস হিসাবে দেখছেন। ব্য়বসায়ীর মতো চলছেন, কোনটাতে ভাল সওদা হবে। তৃণমূলে নাকি বিজেপিতে।”

এদিকে ধারাবাহিক ভাবে বাবুলকে আক্রমণ করা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, “আজ একজন জয়েন করলেন। আগামিকাল আরেকজন যোগদান করতে চাইছেন। এই প্রসেস চলতেই থাকবে। বিজেপি যে ডেলি যোগদানের মেলা দেখিয়েছিল, এবার ওদের দেখানোর পালা। ওরা শুধু দেখতে থাকুক।” গ্যাস বেলুন বলে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের মন্তব্য, বাবুল দলের কোথায় থাকবেন, সেটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা ঠিক করবেন।

আরও পড়ুন: Babul Supriyo: অভিষেকের হাতে হাত, পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে বাবুল সুপ্রিয়

Next Article