কলকাতা : বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের একাধিক জায়গায়। কয়েকশ মানুষ হিংসার ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারেনি, এমন অভিযোগও উঠেছে। আদালতের নির্দেশে সেই মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। তবে, গত বছরের মে মাসে ফল প্রকাশ হওয়ার পর এতগুলো মাস কেটে গেলেও এখনও অনেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি বলে দাবি মামলাকারীর। ভোট পরবর্তী হিংসার সেই মামলায় সোমবার একরম ৩০৩ জনের নাম পেশ করা হল আদালতে। তাঁদের মধ্যে অনেকে কাজে ফিরতে পারেননি বলেও অভিযোগ। ওই ৩০৩ জনকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল ডিভিশন বেঞ্চের তরফে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি। আগামী ১৯ এপ্রিল ফের শুনানি রয়েছে।
মামলাকারীদের তরফের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল এ দিন ৩০৩ জনের নাম ও সমস্ত তথ্য পেশ করেছেন আদালতে। আদালতে তিনি আরও জানিয়েছেন, ওই ৩০৩ জনের মধ্যে ৪৭ জন এখনও কাজে যোগ দিতে পারেননি। এদের মধ্যে ৯২ জনের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে আর ১৬৪ জনকে জোর করে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ দিন মামলাকারীদের তরফে আবেদন ছিল, পুলিশ যদি নিরাপত্তা না দেয় সে ক্ষেত্রে একটি কমিটি গঠন করা হোক, যাতে জাতীয় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কাউকে পুলিশ বা স্থানীয় দুষ্কৃতীরা হুমকি দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানানো হয়। এ দিন রাজ্য পুলিশের আইজি ও ডিজিকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশ যাতে তাঁদের হেনস্থা না করে, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
রাজ্যের দাবি, ঘরছাড়াদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এ দিন আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেন, সংখ্যা বারবার বদলে যায়। তিনি বলেন, ‘সংখ্যাটা ২৬৩ থেকে ৪০০ হয়ে গিয়েছে। আমি কিছু বুঝতে পরছি না। অভিযোগ করা যায়, তাই করছে। কোনও ভিত্তি নেই এই সব অভিযোগের।’
এ দিকে মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্য তার কাজ করছে না। মানুষ আক্রান্ত। ভীত। পুলিশ কেরানির কাজ করছে বলে দাবি করেছেন আইনজীবী। তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্য যদি তার দায়িত্ব পালন না করে তাহলেও অভিযোগ মিথ্যে হয়ে যায় না।’ এ দিকে সিবিআই ওই মামলার চতুর্থ স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে সোমবার। সেখানে জানানো হয়েছে, ২৮ টি মামলার তদন্ত এখনও চলছে।