কলকাতা : সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার প্রসন্ন কুমার রায়কে শনিবারই দুই দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সূত্রের খবর, তিনি আবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। শুধু তাই নয়, প্রসন্ন কুমার রায়ের ফেসবুক হ্যান্ডেলে লেখা রয়েছে, তিনি আবার বিশ্ব হিন্দু সংগ্রাম কমিটির মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টাও ছিলেন। সেই পদাধিকারের জোরে কী করতেন প্রসন্ন? খোঁজ খবর নিল টিভি নাইন বাংলা।
প্রসন্ন রায়ের ফেসবুক প্রোফাইলে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগল কমিটির প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা প্রসন্ন। তাঁর প্রোফাইল খুললে শুরুতেই দেখা যাচ্ছে এই লেখা। ওই সংগঠনের সভাপতি শিপন বসু নামে এক ব্যক্তি। প্রসন্নকে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন শিপন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রসন্নর ফেসবুকে একাধিক পোস্টও রয়েছে। সুন্দরবন, দিঘা, জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় বিলাসবহুল রিসর্টের সঙ্গে প্রসন্ন রায়ের যুক্ত থাকার ইঙ্গিতও রয়েছে। সামসিংয়ে চা বাগান নিয়েও তাঁর একাধিক পোস্ট রয়েছে!
ঘনিষ্ঠ মহলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নি-জামাই হিসাবেই পরিচিতি প্রসন্ন কুমার রায়ের। সেই প্রসন্ন রায়ের আন্তর্জাতিক যোগের কথা সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে এনেছে টিভি নাইন বাংলা। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রসন্নকুমার চাকরি চুরির চক্রে মিডল ম্যানদের কিংপিং। শুধু তাই নয়, প্রসন্ন আবার বিশ্ব হিন্দু সংগ্রাম কমিটির মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২১ সালের জুলাইয়ে উপদেষ্টা হন তিনি। সোশাল মিডিয়ায় প্রসন্নর প্রোফাইল জুড়ে সংগঠনের পদাধিকারী হিসাবে কখনও দুবাই, তো কখনও ইজরায়েল যাত্রার ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে আবার ইউনেস্কোর প্রতিনিধি হিসাবে তুলে ধরেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য এই বিশ্ব হিন্দু সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শিপন বসুর দাবি, বছর দেড়েক আগে বলাকা আবাসনের পুজোয় প্রসন্নর সঙ্গে তাঁর আলাপ। মাত্র দেড় বছরের আলাপচারিতায় এত ঘনিষ্ঠতা কেন? সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের প্রোফাইলে শিপন বসুর পোস্টে প্রসন্নকে বাংলার অন্যতম শিল্পপতি বলেছেন শিপন বাবু। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, প্রসন্ন কুমার রায় কী করেন, তা না জেনে কেন তাঁকে সংগঠনের আর্থিক উপদেষ্টা করা হল? সেই স্বেছাসেবী সংগঠনের সভাপতি শিপন বসুর সঙ্গে কথা বলেন টিভি নাইন বাংলা।
তিনি বলেন, “আমাদের সংস্থায় অনেকেই আছেন। আর্থিক উপদেষ্টা অনেকেই আছেন।” তবে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তা কেবলই ‘কথার কথা’ বলেই জানান শিপন বাবু। কিন্তু কাউকে সংগঠনে নেওয়ার জন্য তাঁদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হয় কি না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিপন বাবু বলেন, “তিনি একজন শিল্পপতি, এটা জেনেছি।” কিন্তু ওনার কী কী ব্যবসা ছিল, সেই বিষয়েও কিছু জানেন না বলেই দাবি শিপন বাবুর।