কলকাতা: কেউ টেট দিয়েছেন ২০১৪ সালে, কেউ ২০১৬ সালে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি হয়নি, এমন অভিযোগে ২০২৩ সালেও রাস্তায় বসে রয়েছেন এমন অনেক চাকরিপ্রার্থী। কবে প্যানেল প্রকাশ হবে, কবে তাঁরা ন্যয়বিচার পাবেন, সেই অপেক্ষায় বসে রয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার সূত্র ধরে প্রকাশ্যে এসেছে আরও এক বেনিয়মের অভিযোগ। নির্ধারিত শূন্যপদের থেকে বেশি চাকরি হয়েছে। ২০১৬ সালের নিয়োগ নিয়ে এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, মোট ৬টি জেলায় অতিরিক্ত প্রায় ৯৩২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় এই তথ্য আদালতে পেশ করবেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁর দাবি,অবিলম্বে ২০১৬ সালের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে।
মামলায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যে শূন্যপদের কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার থেকে বেশি নিয়োগ হয়েছে। মূলত ৬ জেলায় এমন ভূতুড়ে শূন্যপদে নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই তালিকায় রয়েছে মুর্শিদাবাদ, হুগলি, নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়া। টাকা দিয়ে চাকরি বিক্রি, প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ, এমন সব অভিযোগ আগেই উঠেছে। এ ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা মাফিক এই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
আর টি আই করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে মুর্শিদাবাদে শূন্যপদ ছিল ২৮২২, নিয়োগ হয়েছে ৩০৪৬ (অতিরিক্ত ২২৪), নদিয়ায় শূন্যপদ ছিল ১৪৭৫, নিয়োগ হয়েছে ১৬৪৬ (অতিরিক্ত ১৭১), হুগলিতে শূন্যপদ ছিল ২০৪৯, নিয়োগ হয়েছে ২১৩২ (অতিরিক্ত ৮৩), পূর্ব মেদিনীপুরে শূন্যপদ ছিল ৫৫১, নিয়োগ হয়েছে ৬০৪ (অতিরিক্ত ৫৩), পশ্চিম মেদিনীপুরে শূন্যপদ ছিল ১২১০, নিয়োগ হয়েছে ১৫৯৬ (অতিরিক্ত ৩৮৬), পুরুলিয়ায় শূন্যপদ ছিল ১৮০৩, নিয়োগ হয়েছে ১৮১৮ (অতিরিক্ত ১৫)।
অর্থাৎ ওই ৬ জেলা মিলিয়ে মোট শূন্যপদ ছিল ৯৯১০। আর নিয়োগ হয়েছে ১০৮৪২ জনের। মোট ৯৩২ জনকে অতিরিক্ত নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তরুণজ্যোতি তিওয়ারির দাবি ‘কাট অব মার্কস’-এর থেকে কম পেয়েও চাকরি করছেন অনেকে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, আজ পর্যন্ত ২০১৬-র প্যানেল মানুষ চোখে দেখেনি। সেই প্যানেল অবিলম্বে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় ২০১৬ সালের প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি হাইকোর্টের অমৃতা সিনহা।