কলকাতা: জেলে যাওয়ার পর নাকি মুখে অরুচি হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। একটু ভাল-মন্দ খেতে চেয়েছিলেন তিনি। পাঁঠার মাংস খেতে চেয়েছিলেন বলেও শোনা যায়। তবে নেতা-মন্ত্রী বা সেলেব্রিটি যেই হন না কেন, জেলে পরিচয় শুধু একজন বন্দি। সেই বন্দির মুখে অরুচি হলে কি আদৌ কথা শোনে জেল কর্তৃপক্ষ? তাঁর জন্য কি সত্যিই আসে মণ্ডা-মিঠাই? নাকি সেই গতে বাঁধা খাবার? বন্দিজীবন বোঝাতে ‘জেলের ভাত খাওয়া’ বলে উল্লেখ করা হয় অনেক সময়। আদতে কেমন হয় সেই ‘জেলের ভাত’?
সকালের প্রাতঃরাশে সাধারত থাকে, মুড়ি, গুড় অথবা পাঁউরুটি-ঘুগনি। কোনও কোনও দিন চিড়েও দেওয়া হয়। তবে কোনও বন্দির ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ থাকলে মেনু আলাদা। তখন ব্রেকফাস্টের থালায় আসে ডিম, পাঁউরুটি, কলা। আবার ডায়াবেটিস থাকলে বাদ পড়ে কলা, তখন হয়ত দেওয়া হয় আপেল।
দুপুরের খাবারে সাধারণত দেওয়া হয় ভাত, ডাল, সবজি। এছাড়া সেই মেনুর সঙ্গে সপ্তাহে একদিন যোগ হয় মাছ, একদিন মাংস, একদিন ডিম ও একদিন সোয়াবিন। এই মেনুর ব্যতিক্রম হয় না খুব একটা। আর রাতে দেওয়া হয়। রুটি, ডাল ও যে কোনও এক রকমের সবজি। জেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বন্দিদের সারাদিনে ৩০০ গ্রাম সবজি ও ১০০ গ্রাম আলু দিতে হয়।
তবে এই মেনুরও ব্যতিক্রম আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ থাকলে প্রতিদিন মাছ-মাংসের ব্যবস্থা করা হয় বন্দির জন্য। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১৫০ গ্রাম করে মাছ, ১৫০ গ্রাম করে মাংস, ৫০০ গ্রাম দুধ দেওয়া হতে পারে বন্দিকে। তবে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া খাবার খাওয়ার কোনও সুযোগ থাকে না বন্দিদের।
সারা বছর মোটামুটিভাবে এই মেনু থাকলেও উৎসবের দিনগুলোতে পাতে পড়ে ভাল-মন্দ খাবার। দুর্গা পুজোর চার দিন, কালীপুজো বা নববর্ষের দিনে এলাহি খাবারের ব্যবস্থা থাকে জেলে। বিরিয়ানিও থাকতে পারে সেই মেনুতে।