Kolkata Bus Service: কলকাতার রাস্তায় সরকারি AC বাসের দেখা মেলাই দুষ্কর! কেন এমন হাল? বাসগুলো কি সব উবে গেল?
Kolkata AC Bus Service: পরিবহণ দফতর থেকে সপ্তাহখানেক আগেই রিপোর্ট গিয়েছে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ এসি এবং নন এসি বাস ডিপোতেই পড়ে রয়েছে। ৬৩টি ভলভো বাসের মধ্যে ২৫টি আর অশোক লেল্যান্ডের ৩৫০ টি বাসের মধ্যে মাত্র ১৩০ টি বাস রাস্তায় নামছে। কেন এই অবস্থা?
কলকাতা: চাঁদিফাটা রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা? গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছে? ভাবছেন এসি বাসে চড়ে আরাম করে অফিস যাবেন? কিন্তু সে গুড়ে বালি। রাস্তায় সরকারি এসি বাসের দেখা পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাসগুলো সব গেল কোথায়? রাস্তায় বেরোলে সরকারি এসি বাসের দেখা মিলবে হাতে গোনা। পরিবহণ দফতর থেকে সপ্তাহখানেক আগেই রিপোর্ট গিয়েছে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ এসি এবং নন এসি বাস ডিপোতেই পড়ে রয়েছে। ৬৩টি ভলভো বাসের মধ্যে ২৫টি আর অশোক লেল্যান্ডের ৩৫০ টি বাসের মধ্যে মাত্র ১৩০ টি বাস রাস্তায় নামছে। কেন এই অবস্থা? পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, তহবিলে টাকা নেই। অতঃপর, সরকারি এসি বাসগুলির ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না। আর সেই কারণে বাসের মধ্যে এসির গ্যাসের চার্জও ঠিকঠাক হচ্ছে না বলে সূত্রের খবর।
আর এর ফলে বাস্তব চিত্র যা দেখা যাচ্ছে, তা হল বদ্ধ এসি বাসের মধ্যে যাত্রীদের অবস্থা নাজেহাল হচ্ছে অনেক সময়েই। ভ্যাপসা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কখনও আার রাস্তাতেই থমকে যাচ্ছে বাস। গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই যাত্রীদের মাঝরাস্তায় নামিয়ে দিতে হচ্ছে। এই নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভও সামাল দিতে হচ্ছে কন্ডাক্টরদের। মাঝে মধ্যেই বেঁধে যাচ্ছে বচসা। তবে শুধু এসি বাসগুলির ক্ষেত্রেই নয়, নন-এসি সরকারি বাসগুলির অবস্থাও শোচনীয়। পরিস্থিতি এমন যে সরকারি বাসগুলি পথে নামলেও কখন যে তার ইঞ্জিন বিকল হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এমনকী মান্ধাতার আমলের ইঞ্জিন গরম হয়ে অনেক সময়েই কালো ধোঁয়া ছাড়ে। এর ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রাও বাড়ে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৩ মাসে ২৮টি বাস থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা গিয়েছে।
কেন এমন হাল? কারণ একটাই, টাকার অভাব। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের কথায়, যে সংস্থাকে বাস রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাদের আট মাসের টাকা বকেয়া। তারা টাকা না পেলে কাজ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ৮০টি বৈদ্যুতিক বাস আনা হয়েছিল। কিন্তু, সেগুলি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, পরিস্থিতির উপর লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। বললেন, যে এসিগুলি লাগানো হয়েছিল, সেগুলির বয়স অনেকটাই বেড়েছে। বাসগুলিকে মেরামতের জন্য আমরা আবার অর্থ দিয়েছি। কোনও একটি বাসে হয়ত সমস্যা হয়েছে, সেটিকে সাড়িয়ে তুলতে হবে। আমরা পুরনিগমকেও বলেছি এবং তারা উদ্যোগ নিচ্ছে।’ উল্লেখ্য, মাস পাঁচেক আগে পিপিপি মডেলে সরকারি বাস চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিপোয় পড়ে থাকা সরকারি বাসগুলি, কিছু শর্তের বিনিময়ে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে উদ্যোগীও হয় পরিবহণ দফতর। কিন্তু তাদের দেওয়া সব শর্ত মানতে নারাজ বেসরকারি বাস মালিকরা। তাই এখনও ডিপোতেই দাঁড়িয়ে অধিকাংশ সরকারি বাস, ঘুরছে না চাকা।
বেসরকারি বাস সংগঠনের তরফে টিটো সাহা বলছেন, পিপিপি মডেলে আমাদের এই গাড়িগুলি দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনের ফসকা গেঁড়ো দিয়ে আমাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চালিয়ে দিতে পারব। কিন্তু সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আমাদের দিলেই আমরা কাজ করে, চালিয়ে দেখাব।’