কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আরও একবার ধাক্কা খেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সিবিআই তদন্তের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়, সেই নির্দেশি বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে যে ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, সেই নির্দেশও বহাল রাখা হয়েছে। ধোপে টেকেনি মানিক ভট্টাচার্য তথা পর্ষদের আবেদন। ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশে খুশি চাকরি প্রার্থীরা। তবে সব শেষে তাঁদের একটাি প্রশ্ন, কবে চাকরি পাবেন তাঁরা? কবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কথা রাখবেন?
ধর্মতলায় মাসের পর মাস নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ না করে অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে বলেই অভিযোগ তাঁদের। আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ায় তাঁরা কিছুটা আশার আলো দেখলেও, লড়াই যে ঠিক কবে শেষ হবে, সে উত্তর পাচ্ছেন না তাঁরা।
এক চাকরি প্রার্থী প্রবল গরমের মধ্যেও তাঁর সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে রয়েছেন ধর্ণামঞ্চে। প্রশ্ন করাতে তিনি জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর বাড়ি। সন্ধ্যা ৮ টার পর কার্যত বাড়ি ফেরাই সমস্যা হয়ে যায় তাঁর জন্য। সেখান থেকেই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় এসে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিদিন। তিনি বলেন, ‘জানি ছোট মেয়েটার ওপর দিয়ে খুব ধকল যাচ্ছে। কিন্তু এই লড়াইটা তো লড়তেই হবে।’
আর এক চাকরিপ্রার্থী দাবি করেন, ভুল হতে পারে, তবে সেটা শোধরানোর সময় এসেছে। তাঁর কথায়, এতদিন ধরে যে দুর্নীতি হয়েছে, যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দিয়ে তার শুধরে নিক রাজ্য সরকার। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ ২৬৯ জনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ বহাল রেখেছে। এই প্রসঙ্গে ওই চাকরিপ্রার্থী উল্লেখ করেন, ডিভিশন বেঞ্চও যখন একই নির্দেশ দিয়েছে, তখন নিশ্চয় ওই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল। আপাতত তিনি চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের নিয়োগের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা যেন বজায় রাখেন।
পুজোর আগেই যেন একটা ভাল খবর আসে, তেমনটাই আশা করছেন ওই বিক্ষোভকারীরা। মানিক ভট্টাচার্যের আবেদনও এ দিন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে চাকরি প্রার্থীরা দাবি করেন, মানিক যে দিনের পর দিন মিথ্যা কথা বলেছেন, ধাপে ধাপে তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।