কলকাতা: বেআইনি দখল নিয়ে চাপানউতোর চলছেই। এরইমধ্যে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে বিস্ফোরক বিচারপতি অমৃতা সিনহা। অভিযোগ, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি বুজিয়ে বহুতল, বাড়ি, কারখানা এমনকি রিসোর্ট হয়েছে। ফের সেই সমস্ত জায়গাকে দ্রুত আগের অবস্থায় ফেরাতে হবে, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। ওয়েট ল্যান্ড অথরিটিকে ৩১ জুলাই কাজের অগ্রগতির রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে বেআইনি নির্মাণের যাবতীয় নথি CESC ও WBSEDCL-কে দিতে হবে। কোথায় কোথায় বেআইনি নির্মাণে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে সে সব খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে ওই দুই সংস্থা। নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। ক্ষুদ্ধ জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়েও।
এদিন এ প্রসঙ্গে সওয়াল জবাবের সময় কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় বিচারপতিকে। রীতিমতো ক্ষোভের সুরেই বলেন, “এতদিন ধরে কী করেছে প্রশাসন? কোনও আংশিক কাজ নয়, সামগ্রিকভাবে কী করেছেন ডিএম? ভাঙা কী শুধু কাগজ কলমে হয়েছে? ওই জলাভূমিকে আগের অবস্থায় ফেরাতে হবে। এতদিন ধরে কি করছে প্রশাসন? আর কতদিন এই সব বেআইনি নির্মাণ দাড়িয়ে থাকবে?” এখানেই না থেমে জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ডিএম উদাসীন আচরণ করছেন, বলতে বাধ্য হচ্ছি।”
যদিও রাজ্যের দাবি, কাজ হচ্ছে। বিগত কয়েক মাসে অনেকটাই এগিয়েছে কাজ। রাজ্যের আইনজীবী জানান, গত বছর ডিসেম্বরে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী তিনতলা বাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। ৫২ টি ক্ষেত্রে ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ৫০০ এর বেশি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে সেখানে। পুরসভা ও জেলা প্রশাসন কাজ করছে।
যদিও মামলাকারীর দাবি, কোর্ট প্রথম যে বিল্ডিং ভাঙতে বলেছিল, আজ পর্যন্ত সেটায় কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এরপরই জেলাশাসককে নিজের দায়িত্ব মনে করিয়ে দিয়ে বিচারপতি বলেন, “জেলাশাসক যদি এগিয়ে না আসেন তাহলে এই বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হবে না। মানছি, সেখানে অনেক ক্ষোভ-বিক্ষোভ,হবে। কিন্তু চেষ্টা না করলে কিছু হবে না।” এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “আপনারাই ৫০০ এর বেশি বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করেছেন। অন্তত পাঁচটা ভাঙার প্রমাণ দিন।” তাঁর স্পষ্ট কথা, “ওই জলাভূমি আগের অবস্থায় ফেরাতেই হবে। গয়ংগচ্ছ মনোভাব আর বরদাস্ত করা যাচ্ছে না। এবার থেকে এই মামলার লাগাতার শুনানি করব।”