Na Bollei Noy: বাংলার রাজনীতি কি অধঃপতনের পথে? কিছু কথা ‘না বললেই নয়’

TV9 Bangla Digital | Edited By: অরিজিৎ দে

Sep 19, 2022 | 8:17 PM

বীরভূমের বীরপুরুষ অনুব্রত মণ্ডল। সেই কবে, একথা আমরা বুঝে গিয়েছিলাম। কেষ্টবাবুকে বীরপুরুষ বলেছি বলে তাঁর হয়তো আঁতে ঘা লেগেছিল।

Na Bollei Noy: বাংলার রাজনীতি কি অধঃপতনের পথে? কিছু কথা না বললেই নয়
না বললেই নয়

Follow Us

গত বৃহস্পতিবারই আমরা বলছিলাম, যে বাংলার রাজনীতির চূড়ান্ত অধঃপতন হয়েছে। সর্বকালীন তলানিতে এসে ঠেকেছে নেতাদের নীতি-নৈতিক বোধ। বলতে পারেন রাজনৈতিক দৈন্যদশা চলছে। আজ স্বীকার করছি, ভুল বলেছিলাম। আরও কতটা নীচে নামা যায়, সেটা নেতারা আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন। একজন আরেকজনের sexual orientation নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আরেকজন পাল্টা আক্রমণে নেমে প্রথমজনের পিতৃ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেন। যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর তরজা এগোচ্ছে, বিশ্বাস করুন নেওয়া যাচ্ছে না।

যদিও প্রথম যে বক্তব্য থেকে এই গোটা এপিসোডটার শুরু। সেই বিজেপির নবান্ন অভিযানে, মহিলা পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারীর বলা DONT TOUCH MY BODY কথাটা নিয়ে, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করেছেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী। তবে শুধু কুকথা নয়। এই দেখে নেওয়া পাল্টা দেখে নেওয়ার পরিবেশে সৌজন্যেরও সাক্ষী থেকেছেন বিধানসভা। তুমুল বিতন্ডার মাঝেও, বিরোধী বেঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীদের দেখে নমস্কার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতজোড় করেই প্রতি নমস্কার জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সারা দিনের তিক্ততার শেষে এই সৌজন্যটুকু নিয়ে অনেক কথা বলা যেত। যাচ্ছে না, কারণ আমাজের চারপাশে এখন ঘটনার ঘনঘটা। পার্থ থেকে অনুব্রত, গরু থেকে কয়লা, বালি থেকে চাকরি দুর্নীতি, এই সব কিছুতে CBI থেকে CID যখন মাথার চুল ছিঁড়ছে, তখন মনে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের কাজ সহজ করে দিতে চান মুখ্য়মন্ত্রী। আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা। ED CBI চাইলেই ২৪ ঘণ্টা পর স্পষ্ট হয়ে যাবে, সরকারপক্ষের ঘরে যে ধন আছে, বিরোধীদের ঘরেও কি তেমন লুকোনো খাজানা আছে? বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলে দিয়েছেন, চব্বিশ ঘণ্টা সময় পেলে তাঁরা দেখিয়ে দেবেন, কার বাড়িতে কী আছে। মুখ্য়মন্ত্রী যখন বলেছেন, তখন ভরসা তো করতেই হবে।

বীরভূমের বীরপুরুষ অনুব্রত মণ্ডল। সেই কবে, একথা আমরা বুঝে গিয়েছিলাম। কেষ্টবাবুকে বীরপুরুষ বলেছি বলে তাঁর হয়তো আঁতে ঘা লেগেছিল। কিন্তু এবার?মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিধানসভার ভিতরেও বলে দিলেন, অনুব্রত মণ্ডল অবশ্যই বীরপুরুষ। TV9 বাংলার যে প্রতিনিধিরা আজ বিধানসভা কভার করেছেন, তাঁরা বলছিলেন, মুখ্য়মন্ত্রী বলতে উঠতেই, বিজেপি বিধায়করা কেষ্ট বীর? কেষ্ট বীর? আওয়াজ তুলে টিপ্পনি কাটেন। মুখ্যমন্ত্রী সটান বলে দেন, অবশ্যই অনুব্রত মণ্ডল বীর। প্রয়োজনে বিরোধীদের বীরপুরুষ কবিতা পড়ে দেখতে বলেন। এহেন বীরপুরুষ অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচারের তদন্তে জেলে। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ফেঁসে একবার ED আর একবার CBI এর হেফাজতে পিং পং বলের মতো ঘুরছেন। তদন্তে কী হবে, সে তো পরের কথা। আপাতত খেলা যতটা হয়েছে, তাতে দুর্নীতি তদন্তের যাবতীয় ফোকাস তৃণমূলের হেভিওয়েটদের ওপর। রাজ্যের শাসক পক্ষ মনে করছে, অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো। রাজ্যে লাগাতার CBI-ED অভিযান নিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দায়ি করতে রাজি নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এসবের পিছনে অন্য বিজেপি নেতাদের হাত দেখছেন। মমতা ব্যানার্জি কারও নাম করেননি, কিন্তু যাঁদের যা ধারণা করার তাঁরা তা করছেন। রাজনৈতিক পণ্ডিতরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানা আসলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দিকে।

এমন একটা সময়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন রকম বার্তা দিতে হচ্ছে, যখন দুর্নীতি তদন্তে গ্রেফতারের লিস্ট ক্রমশ লম্বা হচ্ছে। আজ রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে CBI। রাজ্যের কোনও উপাচার্য গ্রেফতার হচ্ছেন, এটা তো খুব কম লজ্জা নয় শাসকের জন্য। অবশ্য বর্তমান শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, মধ্য শিক্ষা পর্যদের প্রাক্তন সভাপতি, এসএসসির কর্তা..জেলে যেতে তো আর কেউ বাকি রাখেননি।

ট্রাঙ্কে করে, যেমন অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা, তেমনই ট্রাঙ্কে করে আদালতে ১৭২ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এসব নিয়েই আজ কথা হবে, টিভি নাইন বাংলায়। না বললেই নয়। রাত ৮.৫৭

Next Article