কলকাতা: বহুদিন পর খাস কলকাতায় রাজনৈতিক কর্মসূচির একেবারে প্রথম সারিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাও আবার দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের এক্কেবারে পাশে দাঁড়িয়ে। শনিবার এমন ছবিই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের ধরনা মঞ্চে। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান আলোড়ন ফেলেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। নিঃসন্দেহে ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়কের এমন দলবদল হতবাক করে দলের বহু নেতাকর্মীকেই। ২০২১ সালের জানুয়ারির একেবারে পড়ন্তবেলায় বিশেষ বিমানে রাজীবকে দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। সেখানেই পদ্মপতাকা তুলে নিয়েছিলেন তৃণমূলের এক সময়ের ‘নির্ভরযোগ্য’ সৈনিক।
এরপর বিধানসভা ভোট, ডোমজুড়ে বিজেপির প্রার্থী সেই রাজীবই। তবে বিজেপির টিকিটে হেরে যান তিনি। ২ মে ভোটের ফল ঘোষণা হয়। আর তার কয়েকদিনের মধ্যেই বিজেপির রাজনীতি থেকে আবছা হওয়া শুরু রাজীবের। বঙ্গ রাজনীতি থেকেও!
পদ্মের আরেক নাম রাজীব। আবার রাজীবের অর্থ শোভিতও। অথচ পদ্মে বেশিদিন শোভিত থাকতে পারলেন না রাজনীতির রাজীব। ২০২১ সালের অক্টোবরেই ‘ঘর ওয়াপসি’। তবে এ রাজ্যে নয়, পড়শি রাজ্য ত্রিপুরায়। অভিষেক তাঁকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সেই গেরুয়া রাজ্যে তৃণমূলের পর্যবেক্ষকও করেছিলেন। ত্রিপুরার দায়িত্বই এতদিন সামলেছেন রাজীব।
তবে সূত্রের খবর, রাজীব বাংলায় ফিরতে চাইছিলেন মনে প্রাণে। বাংলার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাইছিলেন। গত বছরই মাকে হারান তিনি। সেই সময় আগরতলায় গিয়েছিলেন মমতা। নেত্রীকে দেখে হাউ হাউ করে কেঁদেও ফেলেছিলেন রাজীব। সেই রাজীব এবার কলকাতায় রাজভবনে অভিষেকের ধরনা মঞ্চে। শুধু ধরনা মঞ্চেই নয়, বহুদিন পর আবার রাজনীতির প্রথম সারিতে।
এদিন ১০০ দিনের টাকা চেয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ফোন নম্বর বিলি করা হয় তৃণমূলের মঞ্চ থেকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই নম্বর বিলির ভার পড়ে রাজীবের কাঁধে। অভিষেক বলেন, এক সময় রাজীব যেহেতু বিজেপিতে ছিলেন, সুকান্তর নম্বর তাঁর কাছে রয়েছে। অভিষেকের ডাকেই এরপর মঞ্চের একেবারে মাঝে এসে অভিষেকের পাশে দাঁড়ান রাজীব। তাঁর হাতে মাইক্রোফোন তুলে দিয়ে ধরনা মঞ্চে বসে পড়েন অভিষেক। কলকাতায় তো বটেই ‘ঘর ওয়াপসি’র পর বাংলাতেই এমন খোলা মঞ্চে দল রাজীবের হাতে মাইক তুলে দিল। রাজীব বলছেন, দলের শীর্ষ নেতারা কমবেশি সকলেই তা বসে শুনছেন। অনেকেই বলছেন, সামনে বড় ম্যাচের জন্য মাঠে নামানো হতে পারে রাজীবকে। আবার কি ভোটের রাজনীতিতে রাজীব ফুটে উঠবে? জবাব সময়ই দেবে।