কলকাতা ও আগরতলা : দশ মাস অন্য দলে খেলে এসে গতকালই ফের জোড়াফুলে প্রত্যাবর্তন হয়েছে। দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ঘরে ফেরার পরই বড় দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁর কাঁধে। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কান পাতলেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, ত্রিপুরায় ঘাসফুলের শক্তি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তাঁকে। সূত্রের খবর, ত্রিপুরায় তৃণমূলের ইনচার্জ করা হচ্ছে রাজীবকে।
ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে বিপ্লব দেবের গেরুয়া শিবিরকে চাপে ফেলতে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনা যাচ্ছে, ত্রিপুরায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। এর আগেও বেশ কিছুটা সময় তৃণমূলের ত্রিপুরার দায়িত্ব সামলেছিলেন রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, ত্রিপুরার মাটি তাঁর কাছে একেবারে অচেনা নয়। আর সেই কারণেই রাজীবের উপর এই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
একইসঙ্গে, আরও একটি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে গতকাল থেকে। ঘর ওয়াপসি যদি করতেই হয়, তাহলে আগরতলায় কেন? কলকাতায় তৃণমূল ভবনে বসে ঘর ওয়াপসি অবশ্যই অনেক বেশি ‘ওজনদার’ হত। কিন্তু, সেসব না করে সোজা ত্রিপুরায় গিয়ে দলে যোগদান কেন? সময় যত এগোচ্ছে, আর যত রাজীবকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন বাড়ছে, ততই যেন সব প্রশ্নগুলি একটি জায়গায় এসেই মিশছে।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরা তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করার হলে, কলকাতার থেকে ত্রিপুরায় বসে ঘর ওয়াপসি অবশ্যই আলাদা মাত্রা এনে দেয়। প্রতিবেশী রাজ্যে দলীয় নেতা, কর্মীদের প্রতি এই বার্তাও পৌঁছে দেওয়া যায়, রাজীবের উপর আস্থা রয়েছে অভিষেকের এবং সর্বোপরি মমতার। আর সেই কারণেই কি তৃণমূল ভবনের বদলে আগরতলায় গিয়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন?
পাশাপাশি, হাওড়ায় অরূপ এবং রাজীবের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক আর যেমনই হোক, সেটা খুব একটা মধুর বলা চলে না। অন্তত রাজ্য রাজনীতিকে যাঁরা খুব কাছে থেকে দেখেছেন, তাঁদের পর্যালোচনা এমনই। গতকাল রাজীবের ঘর ওয়াপসির পর অরূপও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে বর্ষীয়ান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ ‘অভিমানী’ রাজীবের ঘরে ফেরা নিয়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাজ্য রাজনীতিতে যুক্ত থাকলে, রাজীবের সঙ্গে এই দ্বন্দ্ব আরও বাড়তে পারে তৃণমূলের এই নেতাদের। সেই কারণেই কি নতুন করে কোনও দ্বন্দ্ব যাতে তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে রাজীবকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দিচ্ছেন কৌশলী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নাকি এর পিছনে থাকছে অন্য কোনও সমীকরণ? চাপা গুঞ্জন আর এমন একগুচ্ছ প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : Soumitra Khan: ‘আপনি তো বিজনেসম্যান, কিছুই বোঝেননি…সেরেল্যাক খান মাঝে মাঝে’