কলকাতা: টানা ৫৪ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশি। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির মামলায় কোনও অভিযুক্তের বাড়িতে এত সময় ধরে তল্লাশি চালাননি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। রেশন দুর্নীতি নিয়োগে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের বাড়িতে নজিরবিহীন সময় ধরে তল্লাশি চালালেন ইডি আধিকারিকরা। ৫৪ ঘণ্টা পর গ্রেফতার।
কিন্তু প্রশ্ন কে এই বাকিবুর?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা মনে করছেন, বাকিবুর রহমান এক জন ব্যবসায়ী। চাল কল রয়েছে তাঁর। রেশন দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার মাথায় বাকিবুর রয়েছেন বলেই তদন্তকারীরা মনে করছেন। তিনি এক মন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মনে করা হচ্ছে, সেই মন্ত্রীই বাকিবুরকে ঘুঁটি করে দুর্নীতির ফাঁদ পেতেছিলেন। ২০১৬ সাল থেকে আচমকাই বাকিবুরের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করে। একাধিক চালকল, আটকল হতে থাকে বাকিবুলের নামে। পাশাপাশি তাঁর ব্যবসা বিস্তার পেতে থাকে অন্যান্য স্তরেও। পাঁচ তারা হোটেল, নার্সিংহোম, শপিংমলও রয়েছে বাকিবুরের।
তদন্তকারীরা দেখতে চাইছেন, বাকিবুরের টাকা আর কীসে কীসে খেটেছে? আদৌ এই সব ক্ষেত্রগুলিতে বাকিবুরের নিজস্ব টাকা খেটেছে, নাকি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন? তবে তদন্তকারীরা এই বিষয়ে নিশ্চিত, দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে চালকলগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে। সেটি অনুব্রত মণ্ডলের তদন্তের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে। বীরভূমের একাধিক চালকলও এইভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির র্যাডারে ছিল। জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল একাধিক চালকলের মালিককে। বাকিবুরকেও ব্যবহার করা হয়েছে এই ক্ষেত্রে।
সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। তারপরই রাজ্য জুড়ে ১২ জায়গায় তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকরা। নদিয়া, হরিণঘাটার চালকলে তল্লাশি চলে। সূত্রের খবর, সেই সব কটি চালকলেরই মালিক বাকিবুর। তারপরই গত ৫৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চলে বাকিবুরের বাগুইআটির বিলাসবহুল অভিজাত আবাসনে।
উল্লেখ্য, বাকিবুরের বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ২০২২ সালে। সেসময়ে আয়কর দফতর অভিযান চালিয়েছিল। কয়েকশো কোটি টাকার আয়কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।