কলকাতা: জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বড় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বন্ধ করে দেওয়া হবে শহরের সব হুকা বার (Hookah Bar)। অতীতে যে বিষয়টির উপর সেভাবে নজর পড়েনি, সেই কথাও স্বীকার করে নেন তিনি। পুরনিগমের সিদ্ধান্তের কথা জানানোর সময় বলিউডে কীভাবে ধূমপান রোধে সচেতনতা বাড়ানো হয়েছে, সেই কথাও তুলে ধরেন মেয়র। ‘সিগারেট ইন মাই হ্যান্ড, অ্যান্ড আই ফিল লাইন অ্যা ম্যান’ থেকে ‘ফুঁ ফুঁ ম্যেন মর্দাঙ্গি নেহি’পর্যন্ত যে বিবর্তন হয়েছে, সেই কথা উঠে আসে মেয়রের গলায়। ভারতের বিভিন্ন শহরে যে হুকা বন্ধ করা হয়েছে, সেই কথাও জানান কলকাতার মহানাগরিক। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কলকাতা পুরনিগম? যেসব সমস্যাগুলির কথা উল্লেখ করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম…
হুকাবারগুলিতে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে, তার ধোঁয়া শরীরের পক্ষে খুব খারাপ। এমনই মত মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। বললেন, “হুক্কাবারগুলিতে ব্যবহার হওয়া হুকা প্রথমে বলা হয়েছিল কেমিক্যালের মতো। ইলেকট্রিক সিগারেটের মতো। কিন্তু পরে দেখা গেল, প্রচুর ধোঁয়া বেরোচ্ছে। যাঁরা নিয়মিত এই ধোঁয়া নিচ্ছেন, তাদের ফুসফুসের সমস্যা হচ্ছে। সমাজের পক্ষে এটি খারাপ হচ্ছে।”
কোনও কোনও জায়গায় নেশাজাতীয় জিনিস মেশানো হচ্ছে বলে সন্দেহ। যদিও এই নিয়ে কোনও প্রমাণ নেই বলেই জানান মেয়র। ফিরহাদ হাকিমের আশঙ্কা, এর ফলে তরুণ প্রজন্ম এর প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছেন এবং হুকা বারে বার বার যেতে বাধ্য হয়ে যাচ্ছে। মেয়র বলেন, “পুলিশকে অনুরোধ করব কড়া হওয়ার জন্য। কয়েক জায়গা থেকে খবর এসেছে এটার মধ্যে দিয়ে মাদক ব্যবহার হচ্ছে।”
ফিরহাদ হাকিম বলছেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে রেস্তরাঁগুলিতে হুকাবার চালানো হচ্ছে। এটি এখন এমন বড় ব্যবসা হয়ে যাচ্ছে, যে তাতে মানুষের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কোনও কোনও রেস্তরাঁয় হুকাবারগুলি এমন হয়ে যাচ্ছে যে অন্য কোনও মানুষ সেখানে আর যেতে পারছেন না। যদিও মেয়র বলেন, রেস্তরাঁ চালালে কোনও অসুবিধা নেই। রেস্তরাঁ চলুক, খাওয়া-দাওয়া হোক। কিন্তু হুকাবার চালালে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সমস্যা হয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা মেয়রের। আগে কোথাও ছাদের উপরে ছোট করে করা হত, কিন্তু এখন বহু রেস্তঁরাগুলিতেও হুকা বার খোলা হচ্ছে।
হুকাবারগুলির কোনও লাইসেন্সিং ব্যবস্থা যে নেই, সেই কথাও জানান ফিরহাদ হাকিম। মেয়র বলেন, “বারগুলির জন্য যেমন রাজস্ব দফতর আছে। সেখানে কী ব্যবহার করা হচ্ছে, কোনও বিষাক্ত মদ যাচ্ছে কি না… সেই চেকিং-এর ব্যবস্থা আছে। কিন্তু হুকাবারগুলির জন্য কোনও লাইসেন্সিং নেই এমন। ”
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, এই নিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ আসছিল। বলা হচ্ছে, অন্যান্য শহরে বন্ধ হয়ে রয়েছে হুকাবার… অথচ কলকাতা শহরে চালানো হচ্ছে।