কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির খবরে রোজই যেখানে নতুন করে অস্বস্তি বাড়ছে শাসকদলের, সেখানে এবার বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) খতিয়ান তুলে ধরতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। ইতিমধ্য়েই বামেদের দুর্নীতির ময়নাতদন্ত হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। দুর্নীতির শ্বেতপত্র শীঘ্রই সামনে আসবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যা নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চর্চা। বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University)! এ দাবি করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল। করেছেন একটি ফেসবুক পোস্ট। যা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেও।
শনিবার করা ফেসবুক পোস্টে মনোজিৎ মণ্ডল লিখেছেন, ‘আমার কাছে অনেক নাম রেডি আছে। যাদবপুরের নামও আছে, আগের পরেরও। মামলা তো চলছে, কিন্তু সেসব নিয়ে চর্চা হয় না, কারণ এগুলো সিপিএম করেছে যে। আচ্ছা চলুন একটা নাম বলেই ফেলি। ভদ্রলোক টিভিতে তেড়ে ভাষণ দেন। বহু আগে সরকারি কলেজে চাকরি পেয়েছেন। তখন স্নাতকে ৫০ শতাংশ নম্বর না পেলে চাকরি হতো না। উনি রিভিউ করেও ৪৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই আমলে চাকরি হয়েছিল।’ তাঁর কাছে আরটিআই করা তথ্য় রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ওই অধ্যাপক। যদিও পোস্টের শেষে আক্ষেপও করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আক্ষেপের সুরেই লিখেছেন, ‘কী হবে এসব বলে?’ যদিও এই মতামত তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও এ বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা যোগ্যাতার ভিত্তিতেই নিয়োগ পেয়েছেন। যোগ্যতা রয়েছে বলেই তাঁরা কাজ করছেন। উনি যা মন্তব্য করছেন তা নিয়ে উনি চাইলে কোর্টে যেতে পারেন। দলমত নির্বিশেষে কোনও অধ্যাপকের যোগ্যতা নিয়ে ওনার প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আদালতে যেতে পারেন। ওনাকে আমাদের চ্যালেঞ্জ রইল। কোর্টে গেলে সেখানেই দেখা হবে।”
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুনের মাঝামাঝি সিপিএমের (CPIM) লোকাল কমিটির প্যাডের কাগজে লেখা একটি চাকরির ‘সুপারিশপত্র’ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও সেটির সত্যতা টিভি-৯ বাংলা যাচাই করেনি। বর্তমানে ফের সামনে এসেছে এই চিরকুট। ভাইরাল ওই সুপারিশপত্র খুঁটিয়ে পড়লে দেখা যাচ্ছে চিঠিটি ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর কমরেড খগেন্দ্রনাথ মাহাতোর উদ্দেশে লেখা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি সুপারিশ করা হয়েছিল ওই চিঠিতে। বর্তমানে এই সুপারিশপত্র পোস্ট করে বর্তমানে ফের তদন্তের দাবি করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সম্প্রতি কুণাল ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, সিপিএম (CPIM) জমানায় এমন কোনও হোলটাইমার ছিলেন না, যাঁর বাড়িতে কেউ সরকারি চাকরি করতেন না। একই সুর শোনা গিয়েছে ব্রাত্যর গলাতেও। এমতাবস্থায় এবার মনোজিৎ মণ্ডলের পোস্ট ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে জোরদার চর্চা।