কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে যাঁরা ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা এক-একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। অন্তত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তাঁদের সম্পর্কে যে যে তথ্য উঠে আসছে, তার ভিত্তিতে তো তেমনটাই বলা যায়। সে যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষই হোক কিংবা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল সম্পর্কেও যে যে তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের, তা রীতিমতো চমকে ওঠের মতো। পেশায় প্রোমোটার অয়ন শীল আবার তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার মালিকও। অয়ন শীলের আপাতত দুটি কোম্পানির হদিশ পেয়েছে ইডি। একটির নাম এবিএস ইনফোজ়ে প্রাইভেট লিমিটেড। এটি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা হিসেবে নথিভুক্ত। এই সংস্থার দুই ডিরেক্টর। অয়ন শীল ও কাকলি শীল। ৯ বছরের সংস্থাটি এখনও চালু রয়েছে। কোম্পানির নামে দুটি গাড়ি রয়েছে। একটি এসইউভি, অপরটি সেডান। দুটোই দামি গাড়ি। হুগলির চুঁচুড়ার জোড়া শিব মন্দির এলাকায় এবিএস টাওয়ারের অফিস।
অয়নের দ্বিতীয় কোম্পানির নাম একটি নির্মাণ সংস্থা হিসাবে নথিভুক্ত। সাত বছর ধরে এই সংস্থা চলছে। অয়ন শীল ও শমীক চৌধুরী নামে দুজন এই কোম্পানির ডিরেক্টর। সল্টলেকের বাড়িটি প্রযোজনা সংস্থার অফিস বলে অয়ন দাবি করলেও সেই সম্পর্কিত কোনও নথি দেখাতে পারেনি ইডি অফিসারদের কাছে।
অয়নের নামে আর কোনও কোম্পানি রয়েছে কিনা খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা। প্রযোজনা সংস্থা কার নামে রয়েছে, তারও খোঁজ শুরু হয়েছে। ইডি আধিকারিকরা এটাও মনে করছেন, আবাসন ব্যবসাতেও দুর্নীতির টাকা খাটত। কারণ তাঁর বাড়ি থেকে ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড, পুরসভার চাকরি সংক্রান্ত নথিও উদ্ধার হয়েছে। সেটা থেকে তাঁরা মনে করছেন, সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রেই টাকার বিনিময়ে যে কারবার চলত, তা নিয়ন্ত্রণ করতেন অয়ন শীল। সেই টাকা যেত আবাসন ব্যবসায়। এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, সাধারণত তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় যে ধরনের কাজ হয়ে থাকে, অয়নের নামে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় তা হবে না। সেই কোম্পানির মাধ্যমে আদৌ তাহলে কী কাজ চলত, সেটাও আতস কাচের নীচে।