কলকাতা: উপাচার্য বনাম অধ্যাপক। আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে (Kazi Nazrul University) কাজিয়া অব্যাহত। কার্যত শিকেয় উঠেছে পঠন-পাঠন। শিক্ষক-অশিক্ষক-পড়ুয়াদের লাগাতার বিক্ষোভ চলছে উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। শনিবার টিভি ৯ বাংলায় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেন তিনি। সাফ জানালেন, সরকার না চাইলে তিনি পদত্যাগ করবেন না।
সম্প্রতি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্তের পরই উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তেঁতে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ। তবে কেন তিনি রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করেছেন এ দিন সেকথা জানান সাধন চক্রবর্তী। উপাচার্য বলেন, “এখন সরকারি অর্ডার যে হাজিরা দিতেই হবে। যাঁরা আসছেন না তাঁদের শোকজ করতে হবে। আমি সেই নথি রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে চেয়েছি। কিন্তু নথি তুলে দেননি। এবার ২৪ তারিখের মধ্যে আমায় রিপোর্ট জমা দিতে হত। কারা কারা অফিসে এসেছেন বা আসেননি সেই নথি যদি উনি আমায় না জমা দেন তাহলে আমি কী রিপোর্ট পাঠাব? একাধিকবার বলে গিয়েছি ওনাকে। বাধ্য হয়ে রেজিস্ট্রারকে অপসারিত করতে হয়েছে।”
এখানেই শেষ নয়, অতীতের প্রসঙ্গ টেনে সাধনবাবু বলেন, ” অধ্যাপক সজলবাবু ২০১৪ সাল থেকে রয়েছেন। বহুবার সমস্যা তৈরি করেছেন। কয়েকজন শিক্ষক-পড়ুয়া এদের নিয়ে সমস্যা তৈরি করে আমি যাতে চলে যাই তারই ব্যবস্থা করছেন। আসলে ওনার সুপ্ত বাসনা রয়েছে। আমাকে যদি সরিয়ে দেওয়া হয় তাহলে উনি উপাচার্য পদে বসবেন। উনি শিক্ষকদের মধ্যে জানিয়েছেন, যে এই উপাচার্যকে সরিয়ে দিলে আপনাদের মনের ইচ্ছা পূরণ হবে। তারমধ্যে এটাও রয়েছে যে শিক্ষকরা যখন খুশি আসবেন, আবার চলে যাবে। হাজিরা দিতে হবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খোলেন উপাচার্য। বলেন, “আমায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পড়াশোনার খুবই অসুবিধা হচ্ছে। ওখানে ত্রাসের সঞ্চার হয়েছেন। যাঁরাই কাজ করতে চান তাঁদের কাজ করতে দেন না। সবাইকে ধরনা মঞ্চে গিয়ে বসে থাকতে হবে। ভিসি দায়ি বলে দেওয়া সহজ। কিন্তু কেন ভিসি দায়ী? দাগিয়ে দিচ্ছে আমি দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু কোনও প্রমাণ নেই।”
কী ঘটেছে?
মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র (DA) দাবিতে ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল সরকারি কর্মীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের পক্ষ থেকে। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সেই ধর্মঘটে অনুপস্থিত কর্মীদের সরকারি নির্দেশনামা উপেক্ষা করে পুরো বেতন দিয়ে দিয়েছেন ও সেদিনকার অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টার অর্থ মন্ত্রকে পাঠাতে অসহযোগিতা করছেন। এই অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রারকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর সাধন চক্রবর্তী। এরপর থেকে উপাচার্য বনাম রেজিস্ট্রার সংঘাত চরমে ওঠে।