কলকাতা: দুই পড়শির মধ্যে বচসা। সেই বচসা থামাতে আসেন আরেক প্রতিবেশী। অভিযোগ, সেই সময়ই পোষ্য কুকুরকে লেলিয়ে দিয়ে প্রতিবেশি যুবককে রক্তাক্ত করায় মদত দেন এক ব্যক্তি। সল্টলেকের আইসি ব্লকের ঘটনা। শুক্রবার রাতের এই ঘটনা ঘিরে শনিবারও সরগরম ছিল আইসি ব্লক। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি এর আগেও একাধিকবার পোষা কুকুরকে উস্কে অন্যদের ভয় দেখানো, জখম করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে সল্টলেক আইসি ব্লকের বাসিন্দা সুমিতেশ কেনেডির সঙ্গে কোনও একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় ওই ব্লকেরই অপর আবাসিক সুনীল লালের। সেই সময় আইসি ব্লকের বাসিন্দা অবিনাশ কুমার চিৎকার শুনে বেরোন। কী হয়েছে তা জানতে চান। অভিযোগ, সেই সময়ই সুমিতেশ কেনেডি তাঁর পোষা কুকুরটিকে লেলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। হাত, পেট থেকে মাংস খুবলে নেয় কুকুরটি।
অবিনাশ কুমারের চিৎকার শুনে ব্লকের বাকি লোকজন ছুটে আসেন। কোনওভাবেই অবিনাশকে উদ্ধার করে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা করার পর বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এরপরই বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুমিতেশ কেনেডির নামে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কী কারণে এই ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আক্রান্ত অবিনাশ কুমার বলেন, “শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। আমি ওখানে যেতেই উনি কুকুরটি ছেড়ে দেন। আমি যখন যাই ওনার স্ত্রী, বাচ্চারা সকলেই ছিল ওখানে। ওরাই কুকুরটাকে লেলিয়ে দেয় আক্রমণ করার জন্য। এরপরই ওদের পোষ্য আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাত কামড়ে দেয়। আঁচড়ে খিমচে একাকার করা শুরু করে। আমি হাত দিয়ে আটকানোরও চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনি। এরপর কুকুরটি আমার পিছনে গিয়ে প্যান্ট ধরে টানাটানি শুরু করে। জামা, জ্যাকেট সমস্ত কিছু ছিঁড়ে দিয়েছে। সেগুলি পুলিশের কাছে জমা দেওয়া আছে। চিৎকার শুনে সকলে ছুটে আসেন। তাঁরাই কুকুরটিকে সেখান থেকে সরিয়ে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ইনজেকশন নিয়ে সেখান থেকেই থানায় যাই। পুলিশকে সবটা জানাই। ওরা আশ্বাস দেয় ব্যবস্থা নেবে। এমনও বলেছে, যা হয়েছে ভাল হয়েছে। আবারও আমি আমার কুকুর লেলিয়ে দেব। ও সকলকে চিনেও গিয়েছে। এটা নতুন কিছু নয়। এর আগে ব্লকের প্রায় ৫০ শতাংশ লোকের সঙ্গেই এটা করেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা অরুণকুমার কামাদ্দি বলেন, “আমি যখন যাই ঘরের মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কোনও দুর্ঘটনা বা খুন হলে যেমন রক্তে চারদিক ভেসে যায় ঠিক তেমন অবস্থা ঘরটায়। আমি নিজেই ভয় পেয়ে যাই। পরে জানলাম কুকুর ছেড়ে দিয়েছে ছেলেটার উপর। সমস্ত তথ্যও আছে আমাদের কাছে। ছেলেটার দু’টো হাতে, পেটে দগদগে অবস্থা। একটা বাঘকে ছেড়ে দিলে যেমন হয়, ঠিক সেইভাবে আক্রমণ হয়েছে। যিনি এটা করিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ। সরকারি চাকুরিজীবী। বহুদিন ধরে এসব করছেন। থানাতেও অভিযোগ আছে ওনার নামে। আমরা চাই আইন মেনে এরকম লোকজনকে এখান থেকে বের করে দেওয়া হোক।” যদিও এই ঘটনায় অভিযুক্ত বা তাঁর পরিবারের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: Municipality Election: বাড়ছে করোনা, দলগুলিকে ডিজিটাল প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ কমিশনের