কলকাতা: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন। এখনও রাজপথে রয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা এখনও সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। সেই অভিযোগ তথ্য প্রমাণ লোপাটের। তিলোত্তমা ধর্ষণ খুনে তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার তাঁর আর্থিক বেনিয়মের প্রমাণও গায়েবের অভিযোগ। মোট ১৯টি নথি তলব করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। সেখান থেকে এসেছে মাত্র ৯টি নথি। বাকি নথি ‘গায়েব’। স্বাস্থ্যভবনকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে আরজি কর কর্তৃপক্ষ।
এক বছর আগে আর জি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার নন মেডিক্যাল আখতার আলি আঙুল তুলেছিলেন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের মর্গ থেকে শুরু করে বর্জ্য পাচার-সবতেই দুর্নীতির একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে সন্দীপের বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন প্রশাসনিক শাখার অভিযোগ করেছিলেন আখতার আলি। স্বাস্থ্য ভবন আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ মেমো ধরে ১৮টা নথি তলব করে। সঙ্গে জিন সংক্রান্ত তছরুপের অভিযোগের নথি চেয়েছিল। আরজি কর জানায়, তাদের কাছে ৯টা নথি রয়েছে। আর আরজি করের দেওয়া সেই ‘নথি’ হল রসিদ, ভাউচার, যে জিনিস যে দামে কেনা হয়েছিল, তার স্লিপ। কিন্তু স্বাস্থ্যভবন চেয়েছিল, এই সমস্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে যে নোটশিট হয়েছিল, যিনি নোট দিয়েছিলেন, কোন কোন আধিকারিকদের সই রয়েছে, টেন্ডার কী হয়েছিল, কোটেশন কী ছিল, অ্যাকাউন্টের শিট… কিন্তু এসবের কোনও নথিই স্বাস্থ্যভবনের কাছে জমা দেয়নি আরজি কর।
উল্লেখ্য, এই সমস্ত নথি থাকার কথা ছিল স্টোর রুমে। কিন্তু আরজি করের স্টোর রুমে এরকম কোনও নথি পাওয়া যায়নি। পরিষ্কারভাবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছিল স্বাস্থ্যভবনকে। প্রশ্ন হল কোথায় গেল নথি?
চিকিৎসক নেতা শারদ্বত মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্টোর থেকে নথি উধাও তো কিছু নয়, মর্গ থেকে দেহ উধাও হয়ে যাচ্ছে। ডাস্টবিন থেকে বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট উধাও হয়ে যাচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। সন্দীপ ঘোষ বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট বিক্রি করেছেন বাংলাদেশিদের হাতে। মর্গ থেকে দেহ পাচার করা হয়েছে। মরেও কিন্তু রেহাই পাওয়া যায়নি সন্দীপ ঘোষের হাত থেকে। সন্দীপ ঘোষের মেডিক্যাল রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হোক। ”
চিকিৎসক সৌরভ দত্ত বলেন, “সন্দীপ ঘোষ ডাক্তার তো দূরের কথা, একজন অত্যন্ত খারাপ মানুষ। ওঁর পক্ষে সব রকম কাজ করা সম্ভব। এটা নিয়ে আমাদের মনে কোনও প্রশ্ন নেই। কীভাবে দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত ভাবুন, কোনও নথিই পাওয়া যাচ্ছে না!”
অন্যদিকে, চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যা সমস্ত নথির ফাইল, তা স্বাস্থ্যভবনেও দেখে এসেছি। যদি এক বছর ধরে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে, তাহলে এই দায় হেলথ সেক্রেটারিকে নিতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আরও উপরে যদি কেউ থেকে থাকেন, দায় তাঁকেও নিতে হবে।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)