কলকাতা: ২৬ জানুয়ারি সরস্বতী পুজো (saraswati Puja)। আর বাগদেবীর পুজো উপলক্ষ্যে আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। পুজো হবে কি না কর্তৃপক্ষর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে একদিকে যেমন তরজা চলছে, অপরদিকে পুজো ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। তৃণমূল মুখপাত্র সুপ্রিয় চন্দর দাবি ছাত্রপরিষদের এই পুজোয় কোনও অভিনবত্ব নেই। যদিও, তা মানতে নারাজ প্রেসিডেন্সির তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অভিনব পুজো হচ্ছে বলে সওয়াল তাদের।
সুপ্রিয় চন্দ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পুজো যে পড়ুয়ারা করবে বলছে সেখানে কোনও অভিনবত্বের জায়গা নেই। হিন্দু হোস্টেলে ভর্তি হওয়ার পরে দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পুজোটা হয়। সেই পুজো তো হচ্ছেই। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রাজা রামমোহন রায়, ডিরোজিও মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বতন্ত্র ইতিহাস রয়েছে সেই ইতিহাসকে সম্মান জানানো অবশ্যই উচিত। যেহেতু ক্যাম্পাসের ভিতরে সাধারণ পড়ুয়াদের উদ্যোগে পুজো করতে আমরা দেখিনি বা নজির নেই, সেই রীতিকে অপরিবর্তিত রাখার মতামত আমি জানিয়েছিলাম। আর পুজো কলেজ গেটের বাইরেও হতে পারে। বিকল্প পদ্ধতিতে সেই পুজো হতেই পারে।”
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্সির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর প্রান্তিক চক্রবর্তী জানান, “সমস্ত দ্বিমতকে ভুলে গিয়ে অভিনবত্বে যে পুজো হচ্ছে তাতে আমরা সকলে মেতে উঠি। আমি সাধুবাদ জানাই এই প্রথম ছেলেমেয়েরা এই ধরনের উদ্যোগ নিল। এই উদ্যোগ বোধহয় আগে কেউ নিতে পারেনি। কেন হয়নি বা কেন করতে পারেনি সেই দিকে আমি যাব না। আমরা শুধু আনন্দে মেতে উঠতে পারি। আর গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ অভিমত পোষণ করতে পারে।”
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো হবে কি না তাই নিয়ে ব্যাপক টানাপোড়েন চলেছে বিগত কয়েকদিন যাবত। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সরস্বতী পুজোর বিরোধিতা করেছে, অন্যদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি সরস্বতী পুজো করতে হবে। সেই টানাপোড়েন এখনও অব্যাহত। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুজো করতে চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে চিঠি লিখেছিল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কিন্তু পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়নি কর্তৃপক্ষের তরফে। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্সির টিএমসিপি রবিবার একটি পোস্ট করে তাদের ফেসবুক পেজে। দীর্ঘ সেই পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সমালোচনার পাশাপাশি পুজো করে দেখিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। প্রয়োজনে প্রেসিডেন্সির গেটের বাইরেই সরস্বতী পুজো করার জেদ দেখায় তারা।
এই পরিস্থিতিতেই উল্টো সুর শোনা গেল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদকের একটি ছোট্ট টুইটার পোস্টে। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার একটি অংশকে উদ্ধৃতি করে তিনি পুজোর ব্যাপারে জেদ না করার পরামর্শ দেন। আর সেই কারণে প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো করা নিয়ে এখন টিএমসিপি-র অন্দরের তরজা প্রকাশ্যে।