দেবাশিস সরকার (শিক্ষাবিদ): ১৫ নভেম্বর থেকে এ রাজ্যে স্কুল খোলার (School Reopen) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এদিন সরকারি ছুটি থাকায় পঠনপাঠন শুরু হবে ১৬ নভেম্বর থেকে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা আবারও ফিরবে স্কুল ক্যাম্পাসে। দরজা খুলবে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েরও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ি থেকে এই ঘোষণা করেছেন। অনেকেই এই ঘোষণার পর প্রশ্ন তুলেছেন এই সিদ্ধান্ত কি আগে নেওয়া যেত না?
ঠিক কোন সময় হলে বিতর্কটা শূন্য হতো, এ ভাবে এই বিষয়টাকে ধরা ঠিক নয়। কারণ এটা সম্ভবই নয়। এই সিদ্ধান্ত যখনই হয়েছে, তখনই কিছু বিতর্ক থেকেছে। তবে এটা ঘটনা আজ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে হবে।
কেন স্বাগত জানাতে হবে? কারণ, সারা পৃথিবীতে এবং আমাদের দেশেরও একাধিক রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। আমাদের রাজ্য ছাত্র সমাজ, শিক্ষক সমাজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সরব ছিল। কিন্তু কবে খুলবে তা নিয়ে কথা হচ্ছিল। কারণ পুজোর সময় একটা জনসমাগম হয়েছে। তা একেবারে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ের একটা আশঙ্কা কাজ করছিল। আজকে ঘোষণা এবং নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চালু হওয়ার যে কথা মাঝখানে প্রায় ২০ দিন সময় রয়েছে।
যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় তা হলে স্বাভাবিক ভাবেই এই সিদ্ধান্ত আবারও বদল হবে। কিন্তু পরিস্থিতি যে জায়গায় রয়েছে, তা যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে তা হলে এই সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘ফেজ ওয়াইজ’, নবম-দশম-একাদশ-দ্বাদশ এবং কলেজের ক্ষেত্রে যে খোলার কথা বলা হচ্ছে তা কিন্তু ধাপে ধাপে করতে হবে। এক সঙ্গে সকলকে ছেড়ে দিলে চলবে না।
দুই, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষক সমাজ মুখিয়ে রয়েছে আরেকটি সিদ্ধান্তের দিকে। তা হল রেল চলাচলকে স্বাভাবিক করা, পরিষেবা নিশ্চিত করা। সড়ক পরিবহণেও একই কথা প্রযোজ্য। এগুলি যদি নিশ্চিত না করা যায়, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা পড়ান, তাঁরা বা অনেক পড়ুয়া দূরের প্রতিষ্ঠানে পড়েন, তাঁরা যাতায়াত করবেন কী ভাবে। এটা সচল করতে হবে।
যে ভাবে বন্যার কারণে এলাকার পর এলাকা জলের তলায় চলে গিয়ে স্কুলগুলিতে গ্রাস করেছে। কিংবা ভোটের কারণে স্কুলগুলি ব্যবহার করা হয়েছে। পরে সেগুলি পুরনো চেহারায় ফিরে আসেনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের সাহায্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে কিন্তু তার ন্যূনতম পরিকাঠামোর জায়গা সুনিশ্চিত করতে হবে। যদি দেখা যায় পরিকাঠামো উপযুক্ত জায়গায় নেই, তা হলে সেই সমস্ত নির্দিষ্ট স্কুলকে ছাড়ের জায়গায় রাখতে হবে। গাছতলায় বসে তো আর পড়াশোনা হতে পারে না।