কলকাতা: রাজ্যের স্কুল, কলেজ ও অন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এবং স্কুলছুটদের ফেরাতে মোট চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আজ ওই মামলাগুলির একত্রে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
চারটি জনস্বার্থ মামলার বক্তব্য একই। একদিকে স্কুল খোলা নিয়ে বিষয় রয়েছে, অন্যদিকে, স্কুলছুটদের সংখ্যা কমানো। চার জন মামলাকারীর বক্তব্য একই। বৃহস্পতিবারই এক জন শিক্ষক একটি মামলা করেন। তাতে মেনশন করা হয়, যাতে এদিনের শুনানিতে সেই মামলাটিও শোনা হয়। চারটি মামলা একই সঙ্গে শুনবেন প্রধান বিচারপতি। সাধারণত একই ধরনের মামলা একই সঙ্গে শোনা হয়, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের বক্তব্যও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শিক্ষা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, যে তারা দ্রুত স্কুল খুলতে প্রস্তুত। সমস্ত পরিস্থিতি যাচাই করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এদিন রাজ্য সরকারের হয়ে সওয়াল করবেন এজি। তার প্রেক্ষিতে যে রিপোর্ট উঠে আসবে, তা আগামী দিনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদতে কবে স্কুল খুলতে চলেছে, তাতে বোঝা যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই স্পষ্ট করেছেন, সব স্কুলই ধাপে ধাপে খোলা যাবে। রাজ্য সরকার স্কুল খোলার পক্ষেই। কিন্তু সমস্ত দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চায় তারা। স্কুল খুলে ফের তা বন্ধ করে দেওয়ার পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেদিকটাই বিবেচনা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই স্কুল খোলার দাবিতে উত্তাল হচ্ছে শহর। সরব ছাত্র সংগঠনগুলি। স্কুল খোলার দাবিতে এসএফআই ও এবিভিপির জোড়া বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার উত্তাল হয়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি- পরিস্থিতি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ।
আধ ঘণ্টার দাবিতে একই ইস্যুতে একই জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল এসএফআই ও এবিভিপি-র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্কুল খোলার দাবিতে বেলা ১২ নাগাদ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নামে এসএফআই। আধ ঘণ্টার ব্যবধানে একই দাবিতে একই জায়গায় পথে নামে এবিভিপি।
বিক্ষোভকারী থেকে শুরু করে মামলাকারী, প্রত্যেকেরই বক্তব্য একই। অনলাইন ক্লাস করার মতো পরিস্থিতি রাজ্যের বেশিরভাগ পড়ুয়াদেরই নেই। সিংহভাগ গ্রামে নেট কানেকশন সেভাবে পোক্ত নয়, রয়েছে আর্থিক সমস্যাও। অনলাইন ক্লাস করার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের আগ্রহ কমছে। ফলে বাড়ছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজ্যের ছাত্র তথা যুব সমাজ। তাই স্কুল খোলার দাবি সরব শিক্ষাবিদদেরও একাংশ। এই পরিস্থিতিতে পরপর জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় আদালতে। এবার এই মামলার রায় প্রধান বিচারপতি কী দেন, সেটাই দেখার।