কলকাতা: স্কুলগুলির পরিচালন সমিতি নিয়ে জটিলতা একটা ছিলই। শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুলের পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়েছে শিক্ষা দফতর। পরিবর্তে সব স্কুলে বসছেন প্রশাসক। প্রশাসকরাই এবার নিয়োগপত্রও দেবেন। এই পদ কি তাহলে স্থায়ী? নাকি আবারও পরিচালন সমিতি ফিরবে? এই নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। শিক্ষামহলের একাংশ মনে করছে, এই প্রশাসক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়তে পারে স্কুলে।
দীর্ঘ জটিলতা তৈরি হয়েছিল উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের নিয়োগ ঘিরে। অবশেষে আট বছর পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ৮ বছর বাদে চাকরি পাচ্ছেন উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকরা। পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার কথা পরিচালন সমিতির। কিন্তু রাজ্যের বেশিরভাগ স্কুলেই ছিল না কোনও বৈধ পরিচালন সমিতি। বারবার মেয়াদ বাড়িয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। এমতাবস্থায় রাজ্যের সব স্কুলের পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়েছে শিক্ষা দফতর।
ভবিষ্যতে যাতে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই এবার থেকে প্রশাসক নিয়োগপত্র। তবে এই প্রশাসক দিয়ে কতদিন স্কুল চালানো হবে, পরিচালন সমিতি কি আর কোনও দিন ফিরবে? উঠছে প্রশ্ন।
প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের স্কুলগুলোতে কেন এতদিনেও নির্বাচিত পরিচালন সমিতি আনা গেল না? প্রশাসকরা আর কতদিন কাজ করবেন? এই প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ নন্দিনী মুখোপাধ্যায় বলেন, যে ব্যবস্থা আনা হয়েছে, তাতে স্কুলের স্বকীয়তা নষ্ট হবে। তাঁর আশঙ্কা, এবার আরাবুল ইসলাম বা অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতারা স্কুল চালাবেন না তো! তিনি বলেন, রাজ্য সরকার স্কুলগুলিকে যে পথে চালিত করছে, তাতে তুলে দিলেই পারে।
অ্যাডভান্স সোশ্যাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “এটা একটা অস্থায়ী পদক্ষেপ হতে পারে। অবিলম্বে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিনিধি দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করা হোক। শিক্ষার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, এমন কাউকে প্রশাসক করা যায় না। স্কুলকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।”