কলকাতা: মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্যের বার্তা দেবেন মমতা-সনিয়া-ইয়েচুরিরা। আর সেই দিনেই ধূপগুড়িতে আরও চড়বে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেসের দ্বন্দ্বের সুর। ইন্ডিয়া জোটের বন্ধু দলগুলির প্রাদেশিক রাজনীতি সমীকরণে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের তত্ত্ব বার বার তুলে ধরেছে বিজেপি শিবির। আর সেই দৃশ্যই আরও একবার দেখা যেতে পারে শুক্রবার ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের প্রচার ঘিরে। মুম্বইয়ে যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরিরা একই মঞ্চ থেকে বিরোধী ঐক্যে শান দেবেন, সেদিনই বাম-কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব নিশানা করবে ইন্ডিয়া জোটে ‘বন্ধু দল’ তৃণমূল কংগ্রেসকে। ধূপগুড়িতে শুক্রবার বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমরা।
অর্থাৎ একই দিনে দোস্তি, আবার একই দিনে কুস্তির দৃশ্য দেখা যাবে। মুম্বইয়ে আরব সাগরের তীরে ‘দোস্তি’র দৃশ্য। আবার বাংলায় ধূপগুড়ির উপনির্বাচন ঘিরে ‘কুস্তি’র ছবি। একই দিনে দুই দৃশ্য। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ রাজনীতিতে এ দৃশ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল এবং একইসঙ্গ তাৎপর্যপূর্ণও বটে। রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের মতে, আপাতভাবে তৃণমূলের সঙ্গে লোকসভায় আসন সমঝোতায় গেলে কংগ্রেসের ভাল ছাড়া মন্দ হবে না। তাছাড়া মালদা ও বহরমপুর উভয় ক্ষেত্রেই তারা নিজেদের হাতে আসন রাখতে পারবে। তারপরও কেন বাংলায় এই ‘কুস্তির’ বাতাবরণ তৈরি করছে তারা? তাহলে কি কংগ্রেস চাপ তৈরি করে রাখার রাজনীতি করছে? চাপ তৈরি করে কি দু’টির জায়গায় আরও একটি বা দু’টি আসন তৃণমূলের থেকে পাওয়ার চেষ্টা করছে ? এমন একটি তত্ত্ব ইতিমধ্যেই উঠে আসতে শুরু করেছে।
এর পাশাপাশি আরও একটি বড় কারণ হতে পারে, বাংলায় বাম বা কংগ্রেসের কর্মীরা তৃণমূলের বিরোধিতার রাজনীতি করে এসেছে । হঠাৎ তাদের তৃণমূলের সঙ্গে হাঁটতে বললে হিতে বিপরীত হতে পারে। কর্মীরা আরও সরে যেতে পারে দল থেকে। এই আশঙ্কাও রয়েছে বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা। কিন্তু প্রশ্ন, রাজ্য বিধানসভায় কার্যত শূন্যতে এসে ঠেকা বাম-কংগ্রেস (খাতায় কলমে বাইরন কংগ্রেসের বিধায়ক, কিন্তু ভোটে জিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে) শাসকের বিরুদ্ধে পাল্টা প্যাঁচ কষার অবকাশ পাচ্ছে কোথা থেকে? তবে কি সাগরদিঘির উপনির্বাচনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ভরসা যোগাচ্ছে বাম-কংগ্রেসকে? সংখ্যালঘু অঞ্চলে শাসককে পরাজিত করাই কি মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করছে বাম কংগ্রেসের? রাজ্যের শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে তাই কি পিছু হটছে না তারা?
আগামিকাল ধূপগুড়িতে বাম-কংগ্রেসের কর্মসূচি প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন বাংলার কংগ্রেস শিবিরকে। বলছেন, ‘ আমার একটাই কথা অধীর চৌধুরী ও কংগ্রেসকে। এই সিপিএম কংগ্রেসের কর্মীদের খুন করেছে, অত্যাচার করেছে। এই সিপিএমকে মেনে নিতে অসুবিধা হচ্ছে না কংগ্রেসীদের?’