কলকাতা: “তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই আরএসএসের পরিবারের অংশ। তাঁদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে।” কলেজ স্ট্রিটে SFI-র ছাত্র সমাবেশ এ ভাষাতেই মোদী-মমতাকে একযোগে তোপ দাগতে দেখা গেল এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেত্রী দীপ্সিতা ধরকে (Dipsita Dhar)। কেন্দ্র-রাজ্যকে নিশানা করে শুক্রবার রাজপথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুবরা। কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি (NEP) এবং বাংলার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে সুর চড়াচ্ছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই (SFI)। দেশের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে একদিন আগে বাংলায় প্রবেশ করেছে এসএফআইয়ের জাঠা (SFI Jatha)। গত ১ অগস্ট বাংলার পাঁচ প্রান্ত থেকে এই কর্মসূচির সূচনা হয়। পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে জাঠার যাত্রা শুরু হয় তা একদিন আগেই কলকাতায় প্রবেশ করে। শুক্রবারই তার সমাপ্তি। সেই উপলক্ষে কলেজ স্ট্রিটে (College Street) বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ইতিমধ্যেই সেখানে যোগ দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Basu)।
সমাবেশ মঞ্চ থেকে কেন্দ্র-রাজ্যের বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানিয়ে দীপ্সিতা ধর বলেন, “তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই আরএসএসের পরিবারের অংশ। তাঁদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দলের বিরুদ্ধে একমাত্র রাজনৈতিক বিরোধী দল আমরাই, বামপন্থীরা। যদি রাস্তাগুলি আমাদের থাকে তবে আগামীদিনে লোকসভা, বিধানসভা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোদ্দতলা নব্বান্নও আমাদের হবে।”
এদিকে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বামেরা। বিধানসভাতে বর্তমানে একজনও বাম বিধায়ক নেই। সেই পরাজয়ের গ্লানি মুছে গোটা রাজ্যেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বামেরা। নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে গরু পাচার, কয়লা পাচার মামলায় মমতার সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দেগে চলছেন বাম নেতারা। রাজ্যের নানা প্রান্তে চলছে আইন-অমান্য আন্দোলন। আন্দোলন করতে গিয়ে জেল হয়েছে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী। ইতিহাস বলছে বিগত ৪৫ বছরে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনও সদস্যই এভাবে অন্দোলন করতে গিয়ে জেলে যাননি। অন্যদিকে রাজ্য কার্যত ‘শূন্য’ হয়ে যাওয়া দলের বিরুদ্ধে বিগত কয়েক সপ্তাহে লাগাতার তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতার তোপের মুখে পড়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিমের রাজ্য সভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য। বছর ঘুরতেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে বামেদের এই ‘নবজাগরণ’ শাসকের অস্বস্তি খানিক বাড়াবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ।