কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) অভিযোগ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই (CBI)। তবে রাজ্যকে যে ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম’ বা সিট (SIT) গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই সিটের তদন্ত শুরু হয়নি এখনও। সিবিআই তদন্ত শুরু করলেও কেন রাজ্য পুলিশের ‘সিট’ তদন্ত শুরু করল না, সেই প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থও হন তদন্তকারীরা। এ বার সেই সিটকেও চারটি জোনে ভাগ করল রাজ্য। আজ, বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে চারটি জোনে ভাগ করে তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। প্রত্যেক জোনে দু’জন করে আইপিএস রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই তদন্ত করবেন তাঁরা।
নির্দেশিকা অনুযায়ী, তদন্তের স্বার্থে রাজ্যকে চারটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। রয়েছে নর্থ জোন, সাউথ জোন, ওয়েস্ট জোন। এ ছাড়া সিটের সদর দফতরে থাকবেন দু’জন। কলকাতা পুলিশের দু’জন আধিকারিককেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হেড কোয়ার্টারের দায়িত্বে থাকছেন রেলের ডিআইজি সোমা দাস মিত্র, ডিসি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য। নর্থ জোনে থাকবেন উত্তরবঙ্গের আইজিপি ডিপি সিং ও মালদা রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীন কুমার ত্রিপাঠি। ওয়েস্ট জোনের দায়িত্বে থাকছেন পশ্চিমাঞ্চলের এডিজি সঞ্জয় সিং, বর্ধমান রেঞ্জের আইজিপি বি এল মীনা। সাউথ জোনে তদন্তের ভার থাকবে দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সিদ্ধনাথ গুপ্ত ও বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কলকাতা পুলিশের ক্ষেত্রে তদন্তে দায়িত্ব নেবেন আইপিএস তন্ময় রায় চৌধুরী ও আইপিএস নীলাঞ্জন বিশ্বাস।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারীদের একাংশ। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল অবশ্য জানিয়ে দেন যে, ‘সিটের বিষয়টি নিয়ে আদালত অবগত।’
সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় নামে এক আইনজীবী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তাঁর গোটা বক্তব্য শোনেন। এবং সিটের ভূমিকা নিয়ে আদালত সম্পূর্ণ অবগত বলে স্পষ্ট আইনজীবীকে জানিয়ে দেন। নতুন করে আর মামলা করার অনুমতি দেন নি তিনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সিটের বিষয়টি তাঁর নজরে রয়েছে। এই বিষয়ে পরে দেখা যাবে।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় সিবিআই-কে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত ১৯ অগস্ট এই মামলার রায় দেয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তম ডিভিশন বেঞ্চ। খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের তদন্ত করবে সিবিআই এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলার তদন্ত করবে সিট।
চার জোনে ক্যাম্প করে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-ও। একটি ক্যাম্প দুর্গাপুরে। সেখান থেকে মূলত বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ কয়েকটি পশ্চিমের জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। একটি ক্যাম্প উত্তরবঙ্গের জন্য। সেই ক্যাম্প কোচবিহারে হয়েছে। এ ছাড়া, বাকি দুটি ক্যাম্প চলছে কলকাতাকে কেন্দ্র করে। কলকাতা সংলগ্ন কয়েকটি জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করবে এই দুটি ক্যাম্প। আরও পড়ুন: অভিজিৎকে মারল কারা? রয়েছে প্রভাবশালী যোগ? জেলে গিয়ে জেরা করবে সিবিআই