Recruitment Scam: ১০ লাখ দিলেই নিয়োগ? মহিষবাথানের কর্পোরেট অফিসের অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন SLST আন্দোলনকারী
ED Raid: অভিযোগ উঠেছে, এই অফিস থেকেই নাকি চাকরির ডিলিং হত হত। দর দাম ঠিক করা থেকে যাবতীয় কাজ হত... সবই নাকি হত এই অফিস থেকেই।
কলকাতা: মহিষবাথানে মানিক ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডলের ট্রেনিং সেন্টারের অফিসে হানা দিয়েছিলেন ইডির তদন্তকারী অফিসাররা। মিনার্ভা এডুকেশন অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নামে চলত ট্রেনিং সেন্টার। তালা ভেঙে সেই অফিসে ঢুকেছিল ইডি। অভিযানে চালানো হয়েছিল তাপসের বারাসতের বাড়িতেও। মহিষবাথানের অনেকেই বলছেন, তাপসের ওই অফিসে মাঝেমধ্যেই আসতেন মানিক ভট্টাচার্য। অভিযোগ উঠছে, মহিষবাথানের এই অফিস ঘিরেই তৈরি হয়েছিল দুর্নীতির আখড়া। এই সংস্থার অন্তর্গত একাধিক ডিএলএড কলেজ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই অফিস থেকেই নাকি চাকরির ডিলিং হত হত। দর দাম ঠিক করা থেকে যাবতীয় কাজ হত… সবই নাকি হত এই অফিস থেকেই।
এসএলএসটির আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মতিউর রহমানও। হকের চাকরির দাবিতে আজও তিনি বসে রয়েছেন ৫৮০ দিনের আন্দোলনে। বেকারত্বের জ্বালা ঘোচাতে প্রাথমিকে চাকরির চেষ্টা করেছিলেন মতিউরও। তাঁর কাছেও নাকি এসেছিল ‘চাকরির টোপ’। তিনিই একসময়ে গিয়েছিলেন মহিষবাথানের ওই অফিসে। তাঁর কাছেও নাকি ‘অফার’ এসেছিল চাকরির। ১০ লাখ টাকা দিলেই নাকি হাতেগরম নিয়োগপত্র চলে আসবে, এমনই টোপ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টাকা দিতে চাননি বলে চাকরিও জোটেনি মতিউরের। মহিষবাথানের ওই কর্পোরেট অফিসে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন এসএলএসটি আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থী মতিউর রহমান।
তিনি বলেন, “তাপস মণ্ডলের মহিষবাথানের অফিসে সমস্ত ডিএলএড কলেজের রেজিস্ট্রেশনের সব ফাইল যেত। প্রার্থী পিছু ৫ হাজার টাকা জমা করে আসতে হত। সেইরকমই এক ডিএলএড কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আমি তাঁর অফিসে একবার গিয়েছিলাম। ২০২০ সালের শেষে দিকে। কথায় কথায় উনি জানলেন, আমি ওয়েটিং-এ আছি। আমাকে বললেন, তুমি ওয়েটিংয়ে আছো, বসে আছো এতদিন ধরে, এত চাকরি সব হয়ে গেল, এত করে দিলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কত লাগবে? উনি বললেন, বেশি লাগে না। দশ লাখ দিলেই হয়ে যাবে। তুমি যদি দশ লাখ দিতে পারো, তাহলে বল, অল্প দিনের মধ্যে তোমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাইয়ে দেব। শুনলাম, এই তাপস মণ্ডলের অফিসে গতকাল ইডি হানা দিয়েছে। ওখানে যে কারবার চলত, তা আমি নিজের চোখে দেখেছিলাম একসময়ে। ইডি সঠিক পথে এগোচ্ছে, দেখে ভাল লাগছে।”
যদিও মতিউর রহমানের এই বিস্ফোরক দাবির পর টিভি নাইন বাংলার তরফে তাপস মণ্ডলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি অবশ্য অফিস থেকে চাকরির ডিলিং-এর যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ১০ লাখ টাকা দিলে চাকরি হয়ে যাবে, এমন প্রতিশ্রুতির অভিযোগের প্রসঙ্গেও তাঁর বক্তব্য়, “বাজে কথা।” মানিক বাবুর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের বিষয়ে তাপস মণ্ডল বলেন, “অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কলেজের সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে যেতাম। নানান কলেজের সমস্যা নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতাম… আমাদের কলেজগুলির অনেক সমস্যার সমাধান করেছেন। আমাদের কলেজগুলি ওনার জন্যই বেঁচে আছে।” তবে তাঁর অফিসে ইডির হানা কেন, সেই বিষয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। উল্লেখ্য, তাপস মণ্ডলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা ইডি।তবে তিনি সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। তাপস বাবুর ছেলে ব্রিজেশ মণ্ডলের থেকে জানা গিয়েছে, আগামী ২০ অক্টোবর তাপস মণ্ডলকে ইডি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে।