কলকাতা : ফের লালবাজারে লক আপের ভিতরেই আত্মহত্যার চেষ্টা। আন্দোলনকারীদের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর চার জন এসএলএসটি চাকরি প্রার্থী ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আর শুক্রবার সকালে তাঁদের লক আপ থেকে না ছাড়ায় ফের আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন তাঁরা। এ দিন এক মহিলা চাকরি প্রার্থী গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাকিরা তাঁকে কোনও মতে নামাতে পারলেও রীতিমত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই মহিলা। ভিতরেই তাঁকে শুশ্রূষা করা হচ্ছে। লালবাজারের ভিতরে এমন বিক্ষোভের পরিস্থিতি কার্যত নজিরবিহীন।
এ দিন সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা দাবি করতে থাকেন, তাঁদের লক আপ থেকে ছাড়া না হলে তাঁরা লক আপের মধ্যেই আত্মহত্যা করবেন। সকাল ১১ টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন তাঁরা। ঘড়ির কাঁটায় ১১ টা পেরিয়ে যাওয়ার পরই আত্মহত্যা করতে উদ্যত হন কেউ কেউ। পরিস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, আপাতত লালবাজারের ভিতরেই অনশনে বসেছেন তাঁরা।
তাঁদের দাবি, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কলকাতা পুলিশ তাঁদের ধর্না মঞ্চ তুলে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা না করলে গণ আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বিক্ষোভকারীরা। তবে ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার যে খবর সামনে এসেছে, তা ভুয়ো বলেই দাবি করা হয়েছে লালবাজারের তরফে। কলকাতা পুলিশের দাবি, এই খবর যারা ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিকে, শুক্রবার সকাল থেকে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপে অন্তত চারজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে একজনকে ইএনটি এবং আর একজনকে মেডিসিনের বহির্বিভাগে পাঠানো হয়েছে। কারও অসুস্থতা গুরুতর নয় বলেই জানা গিয়েছে।
অভিযোগ, একটা ছোট ঘরে ৮০ জনকে রাখা হয়েছে, ১টা মাত্রা পাখা ছাড়া আর কিছু নেই। ফলে তীব্র শ্বাস কষ্ট হচ্ছে বেশ কয়েকজনের। জামাল শেখ, সম্রাট মাজি, পূর্ণিমা দলাই ও কঙ্কালি মণ্ডল অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ধর্মতলার ধর্না মঞ্চ থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ওই চাকরি প্রার্থীদের। পুলিশের দাবি, নিয়ম না মেনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। এরপর রাতভর চলে নাটক। রাতে এসএসকেএম হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি, হাসপাতাল থেকে থানা ছোটাছুটি করেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী।