কলকাতা: রেশন দুর্নীতি মামলায় বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্য়কর তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে। অভিযোগ, রেশনের সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা কামিয়েছে এই বাকিবুর রহমান। আর তাতেই ফুলে ফেঁপে উঠেছে তাঁর সম্পত্তি। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের একাধিক তত্ত্বও উঠে এসেছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। তবে, এই বাকিবুরের উত্থান বালু-জমানায় নয়, তারও অনেক আগে থেকে। ২০০৪ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্থান শুরু হয়েছিল বাকিবুরের। তখন রাজ্যে বামেদের রাজত্ব। সেই সময় থেকেই নিজের খেল দেখাতে শুরু করেছিল বাকিবুর রহমান।
শুরুটা হয়েছিল মহম্মদ সিরাজ নামে এক আত্মীয়র হাত ধরে। এরপর তৈরি করে চালকল। সূত্রের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের কয়েকজন নেতার সঙ্গেও বাকিবুরের যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। একইসঙ্গে বাড়তে থাকে বাকিবুরের ব্যবসার বহর। চালকলের কাজ দিয়ে শুরু হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাকিবুর তৈরি করে ফেলে আটা কলও। সঙ্গে আরও বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করে বাকিবুর। সূত্রের দাবি, বাম আমলেই খাদ্য দফতরের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল বাকিবুরের। আর সম্পত্তিও ক্রমে বাড়তে বাড়তে কুবেরের ধনের আকার নিতে থাকে। ভিন রাজ্যেও হোটেল ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
এরপর রাজ্য রাজনীতিতে পালাবদল। বামেদের হঠিয়ে ক্ষমতায় এল তৃণমূল। তৈরি হল নতুন সরকার। খাদ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সূত্রের দাবি, এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি বাকিবুরকে। কার্যত রকেট গতির উত্থান হয়েছিল বাকিবুরের ও তাঁর সম্পত্তির। খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল। বালু জমানায় খাদ্য ভবনের বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে বলে সূত্রের দাবি।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের কয়েকজনের সঙ্গে বাকিবুরের এককালে ঘনিষ্ঠতার ইস্যুতে খোঁচা দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএম বুঝতে পেরে গিয়েছে, বাকিবুরের রহমানের কেস যত গভীরে যাবে, তত সিপিএমের নাম উঠে আসবে। ব্যাপারটা হল, ঠাকুর ঘরে কে… আমি কলা খাইনি। তাই সিপিএম তড়িঘড়ি সবার আগে মিছিল করতে নেমে গিয়েছে। বোঝাতে চাইছে, তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে। বাকিবুর রহমানকে চুরি করা শিখিয়েছিল, সেই সময়ের খাদ্যমন্ত্রী।”