কলকাতা: যাদবপুরের মেন হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক প্রাক্তনী সহ তিন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জোরকদমে তদন্ত চলছে। আর এসবের মধ্যেই উঠে আসতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বুধবার রাতে ওই ঘটনার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টলে একাধিক জেনারল বডি বৈঠক হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। সেই জেনারেল বডির বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ ও বাকি দুই অভিযুক্তও উপস্থিত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, হস্টেলের গেট বন্ধ রাখা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল জেনারল বডির বৈঠকে। আর সেই কারণেই প্রাথমিকভাবে ঘটনার বিষয়টি জানতে পারলেও পুলিশকর্মীরা হস্টেলে ঢুকতে পারেননি বলে জানা যাচ্ছে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই যাদবপুর থানায় আলাদা একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এদিকে বুধবারের ঘটনার পর জেনারেল বডির বৈঠক ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসতে শুরু করেছে। গেট বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্তের কথা জানা যাচ্ছে, সেই সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছিল? নির্দিষ্টভাবে কে বা কারা হস্টেলের গেট বন্ধ করেছিল? জেনারেল বডির বৈঠকে কারা নেতৃত্ব দিয়েছিল? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন ভাবাচ্ছে যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার তদন্তকারী অফিসারদের। এত রাতে কেন জেনারেল বডির মিটিং? কীসের এমন জরুরি দরকার? তদন্ত নেমে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে যা সব তথ্য উঠে আসছে, তাতে আরও তাজ্জব তদন্তকারীরা। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ১৫ অগস্টের ফুটবল ম্যাচ নিয়েই জিবি বৈঠক ডাকা হয়েছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে বেশিরভাগ পড়ুয়া জানিয়েছে।
এর পাশাপাশি যাদবপুরের হস্টেলের গেট বন্ধ রাখার বিষয়টি হস্টেল সুপার জানতেন কি না, সেই বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে। যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় পেঁয়াজের খোসার মতো রহস্যের জট তৈরি হয়েছে। পরতে পরতে নতুন রহস্যের মোড়। আর এই সবদিকগুলি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন সূত্রে খবর, হস্টেলের সুপার মেন হস্টেলের উপরের তলায় উঠতে ভয় পান। উঠলে ছাত্ররা নাকি তাঁকে চোরের অপবাদ দেয়। আর এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নাকি তাঁকে বাঁচাতে আসে না। হস্টেল সুপারের অবস্থা নিয়ে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় বলেছেন, ‘সুপার বলেছেন, তাঁকে হস্টেলে ঢুকতে পর্যন্ত দেয় না ছাত্ররা। একবার তিনি দুজন সহকর্মীকে নিয়ে ঢুকেছিলেন হস্টেলে। তাঁদের সারারাত একটি ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলেন ছাত্ররা। তারপর তাঁদের দিয়ে একটি চিঠি লিখিয়ে নিয়েছিলেন ছাত্ররা যে তিনি আর কোনওদিন সেখানে আসবেন না। কারণ, তিনি নাকি সেখানে ফোন চুরি করতে এসেছিলেন।’