কলকাতা: মহিলাদের ক্ষমতায়নের দিকে শুরু থেকেই বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন দেখা যেতে পারে। বোর্ড গঠনে মহিলাদের প্রাধান্য দিতে উদ্যোগী তৃণমূল নেতৃত্ব। লোকাল বডি নির্বাচনে মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের আইন আগেই নিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ তো থাকছেই, সঙ্গে আরও বেশি পদে মহিলাদের আনতে চাইছে তৃণমূল। অর্থাৎ, সংরক্ষিত আসন নয়, এমন জায়গাতেও মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।
রাজ্যে ২২টি জেলা পরিষদ, কয়েকশো পঞ্চায়েত সমিতি ও তিন হাজারেরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ জায়গায় জেলা পরিষদ, সমিতি ও পঞ্চায়েতের মাথায় তো মহিলারা বসছেনই। সঙ্গে আরও বেশি আসনে পদাধিকারী হিসেবে দায়িত্ব পেতে চলেছেন মহিলারা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই পদক্ষেপ কি মহিলা ভাবাবেগে আরও শান দেওয়ার চেষ্টা? সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।
যে কোনও নির্বাচনের ক্ষেত্রেই মহিলা ভোটব্যাঙ্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। আর বাংলায় এই মহিলা ভোটব্যাঙ্কের সিংহভাগই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে রয়েছে বলে বার বার দাবি করে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক শিবিরও ভোট রাজনীতিতে মহিলাদের বরাবর বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। নারী ক্ষমতায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য। যেমন মেয়েদের শিক্ষার জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্প, যা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। তাছাড়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে মাসে মাসে মহিলাদের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া। রয়েছে রূপশ্রী, বার্ধক্য ভাতার মতো প্রকল্পগুলিও।
একুশের বিধানসভা ভোটে মহিলা ভোটব্যাঙ্কের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে তৃণমূল শিবির। পঞ্চায়েতেও মহিলা ভোটব্যাঙ্কের সিংহভাগ তৃণমূলের পক্ষেই গিয়েছে। তাই কি এবার লোকসভা ভোটের আগে মহিলা ব্রিগেডকে আরও মজবুত করতে চাইছে রাজ্যের শাসক শিবির? সেই কারণেই কি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত? এমন প্রশ্ন কিন্তু ঘুরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। তৃণমূল সুপ্রিমো নির্দেশ দিয়েছেন ১৬ অগস্টের মধ্যে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের জন্য। সূত্রের খবর, সেখানে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে মহিলাদের প্রাধান্য থাকবে চোখে পড়ার মতো।