কলকাতা: উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার বাসিন্দা রবি দাস। লালঝান্ডার একনিষ্ঠ কর্মী। বিশেষভাবে সক্ষম। জীবনে প্রতিকূলতাও অনেক রয়েছে। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করেই, হালিশহর থেকে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতায়। তাঁর প্রিয় নেতা যে গুরুতর অসুস্থ। এমন অবস্থায় বাড়িতে বসে থাকতে মন সায় দেয়নি। তাই সম্বল হ্যান্ড সাইকেল চালিয়েই প্রায় ৮০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে, যেখানে বুদ্ধবাবু ভর্তি রয়েছেন। গত পরশু হালিশহর থেকে রওনা দিয়ে, সোমবার সন্ধেয় তিনি পৌঁছন আলিপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। হ্যান্ড সাইকেলে লাল ঝান্ডা লাগিয়ে হাসপাতালে এসে হাজির তিনি। বলছেন, বুদ্ধবাবু যতদিন না সুস্থ হয়ে উঠছেন, ততদিন হাসপাতাল চত্বরেই থাকবেন তিনি।
জীবনের প্রতিকূলতাকে কোনওদিন বাধা বলে মনে করেননি তিনি। সাচ্চা কমরেড। লাল ঝান্ডাকে বড্ড ভালবাসেন। দলের টানে বার বার ছুটে গিয়েছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। একুশে বামদের ব্রিগেড সমাবেশের সময়েও হালিশহর থেকে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। ব্রিগেডের দু’দিন আগেই ময়দানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। মাস খানেক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সমাবেশেও ওই একইভাবে এসেছিলেন হালিশহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রবি দাস। অতীতে দিল্লিতেও গিয়েছিলেন কৃষক সভায় যোগ দিতে। আজ সন্ধেয় হাসপাতাল চত্বরে রবি বাবু বলছেন, ‘কষ্ট হয়েছে। কিন্তু কষ্টটা কষ্ট বলে মনে করি না। যতদিন না উনি সুস্থ হচ্ছেন, ততদিন এখানেই থাকব।’
হালিশহর থেকে কলকাতায় আসার পথও খুব একটা মসৃণ ছিল না তাঁর জন্য। অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। সেই কথাও নিজেই জানালেন রবি দাস। বলছেন, ‘টাকা পয়সা ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। সাইকেলের হাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। ভেঙে দিয়েছে।’ কিন্তু এসবের কিছুই তাঁকে শেষ পর্যন্ত দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রিয় নেতার শারীরিক অসুস্থতায় পাশে থাকতে পৌঁছে গিয়েছেন আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে। দু’দিন ধরে হালিশহর থেকে কলকাতার লম্বা পথে এই অদম্য জেদই ছিল তাঁর সঙ্গী। বলছেন, ‘চাই উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন।’