কলকাতা: SSC গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি নিয়োগে রায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের। এসএসসি নিয়োগে প্রাথমিকভাবে দুর্নীতি প্রমাণিত। আর এই দুর্নীতিতে যুক্ত উচ্চপদস্থ অফিসারেরা। প্রাক্তন বিচারপতি বাগের রিপোর্ট জমা পড়ার পর বুধবারের রায়ে এমনটাই জানাল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি ওই বেঞ্চ জানিয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে হওয়া নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের আরও নির্দেশ, সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখে এ বার এসএসসি সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চেই শুনানি হবে।
মামলাকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বলবৎ রইল। অর্থাৎ সিবিআই তদন্তের নির্দেশও বলবৎ রইল। ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে কমিটি তৈরি হয়েছিল। তাই এই সরকারি দুর্নীতিতে জড়িত তৎকালীন মন্ত্রীও। পাঁচ সদস্যের সুপার কমিটি জড়িত। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মেনেই গোটা বিষয়টির তদন্ত হবে।’
এ দিন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে জানান যে, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে কোনও ভুল নেই। এমনকী তাঁরা বলেন, বিতর্কিত ভাবে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের বেতন বন্ধ করা বা ফেরত দিতে বলার সিদ্ধান্তেও কোনও ভুল নেই। এ দিন মামলাকারীদের আইনজীবী সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, ‘বাগ কমিটির যে রিপোর্ট ছিল তার উপর ভিত্তি করে সিঙ্গল বেঞ্চ মামলা এগিয়ে নিয়ে যাবে। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি যে যে শব্দগুলি ব্যবহার করেছিলেন তার থেকে অনেক বেশি কঠিন শব্দ ব্যবহার করে ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে এই সুপার কমিটি সরকারি দুর্নীতিতে যুক্ত ছিল।’
এসএসসি-র গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-র নবম এবং দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মোট সাতটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়রে সিঙ্গল বেঞ্চ। পরে মামলাগুলি ডিভিশন বেঞ্চে স্থগিত হয়ে যায়। পরে ডিভিশন বেঞ্চ প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে। এই কমিটি নিয়োগের সব মামলা খতিয়ে দেখে।
এরপর গত ১৩ মে আদালতে বাগ কমিটি যে রিপোর্ট পেশ করে সেখানে কাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে, সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় একাধিক হেভিওয়েট কর্তাদের নামের পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্তাদের নামও উল্লেখ থাকে সেখানে। ৮০ পাতার ওই রিপোর্টের শেষ পাতায় রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তাঁর তৈরি উপদেষ্টা কমিটি বেআইনি ছিল বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে। তবে এই রিপোর্টে পার্থ-র বিরুদ্ধে কোনও মামলার কথা তখনও বলা হয়নি।