কলকাতা: দ্রুত নিয়োগ দুর্নীতির মামলার নিষ্পত্তি করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেইমতো বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে চলছে শুনানি। কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক হলফনামাও পেশ করেছে স্কুস সার্ভিস কমিশন। ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগে যখন বিধ্বস্ত কমিশন, তখন ফের একবার ডিভিশন বেঞ্চের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল এসএসসি। কমিশনের উত্তর মোটেই সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশ বসাক। কমিশন যে তথ্য আদালতে পেশ করছে, তা যথেষ্ট নয় বলেই উল্লেখ করেছে আদালত। সোমবার নবম-দশমে নিয়োগের সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার নিয়ে বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।
এসএসসি-র প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে এদিন বিচারপতি বলেন, “প্রথম দিন থেকে আমরা জানতে চাইছি যে এসএসসি-র মাধ্যমে সুপারিশ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়ে থাকলে, সেটা কি আপনারা খুঁজে পেয়েছেন কিনা? খুঁজে পেয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে কী করেছেন?” উত্তরে কমিশন বলে, “আমরা অনেক অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। সেগুলো আদালতের সামনে পেশ করেছি। তারপর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি।”
এরপরই এসএসসি দাবি করে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের ক্ষেত্রে সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার করার কোনও বিধি কমিশনের আইনে নেই। বিচারপতি জানতে চান, কমিশন যাদের সুপারিশ করেছিল তাদের ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তি কি নিয়োগপত্র পেয়েছেন? এটা খতিয়ে দেখার জন্য সিবিআই-কে প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।
এরপর বিচারপতি সরাসরি ভর্ৎসনা করে বলেন, “কমিশন কেন সব তথ্য আদালতের সামনে নিয়ে আসতে লজ্জা পাচ্ছে? গত প্রায় ১ মাস ধরে আমরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকে সাহায্য চাইছি। কিন্তু আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনারা কিছু লুকোতে চাইছেন।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অর্থাৎ যারা নিয়োগ পত্র দেয়, তারা এদিন আদালতে জানিয়েছে যাদের সুপারিশ পত্র দেওয়া হওয়া হয়েছিল তাদের ছাড়া কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। অন্যদিক, কমিশন জানিয়েছে, নবম-দশমের নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৮৩ জনের সুপারিশপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম ছিল। তাদের মধ্যে ১২২ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিচারপতির প্রশ্ন, “বাকি ৬১ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেননি কেন? আদালত বারণ করেছিল? সুপ্রিম কোর্টের কোনও স্থগিতাদেশ আছে? হাইকোর্টের কোনও স্থগিতাদেশ আছে?” উত্তরে কমিশন বলে, ‘না।’ বিচারপতির মন্তব্য, “এই ৬১ জনের রাজ্যের বেতন ভোগ করার কোনও অধিকার নেই।”
কমিশন এদিন আদালতে আরও জানিয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্যানেল থেকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ ছিল। সুপারিশপত্র দেওয়া হয়নি, এমন প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে বলেও দাবি কমিশনের। বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য আরও একবার কমিশনকে সময় দিল আদালত। আগামী বুধবারের মধ্যে রিপোর্ট দেবে কমিশন।