কলকাতা: এসএসকেএম-এ আগুন লাগার কারণ কী, তা জানতে শুক্রবারই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা হাসপাতালে আসবেন। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে নমুনা সংগ্রহ করবেন তাঁরা। এসএসকেএম-এ আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন হলে, তা বাড়ল কী ভাবে! আপাতত সেই প্রশ্নের মুখেই দাঁড়িয়ে এসএসকেএমের অগ্নিকাণ্ড। সেন্ট্রাল ল্যাব সংলগ্ন গলিপথের সিঁড়ি ধরে দোতলায় উঠলেই পিপিপি মডেলের ডায়গনিস্টিক সেন্টার। সেন্টারের সিটি স্ক্যান ঘর, ইউএসজি ঘরের মধ্যে আগুন সীমাবদ্ধ থাকায় বাঁচোয়া।
আগুনের উৎসস্থল দোতলার অপর প্রান্তে নিউরো সার্জারি ওয়ার্ড। দুই প্রান্তের মধ্যে রক্ষাকবচ বলতে কালো রঙের একটি লোহার গেট। আগুনের কাছে এই লোহার দরজা কার্যত কোনও বাধা নয়, সম্ভবত সে কারণেই নিউরো সার্জারি ওয়ার্ড থেকে ম্যাকেঞ্জি এবং ট্রমা কেয়ারে রোগীদের তড়িঘড়ি স্থানান্তরিত করা হয়।
পিপিপি মডেলের ডায়গনিস্টিক সেন্টারে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কী ছিল? প্রশ্ন উঠছে বেশ কিছু। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীরা যন্ত্র চালানোয় প্রশিক্ষিত কি আদৌ ছিলেন, সেটাও বিচার্য।
আরও একটি বিষয় উঠে আসছে। সিটি স্ক্যান যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই কি আগুন? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার ক্ষেত্রেই তদন্ত রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ।
এসএসকেএম-এর যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেখানেই এমার্জেন্সি বিভাগ, এমার্জেন্সি মেডিসিন, অবজারভেশন ওয়ার্ড, নিউরো সার্জারি ওয়ার্ড, সেন্ট্রাল ল্যাব, প্যাথলজি বিভাগ, রেডিও ডায়াগনসিস বিভাগ। এরকম একটি বিল্ডিংয়ে আগুন ভয়াবহ আকার নিলে রোগীদের নিরাপদে নামানোর মতো পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিল বলে দাবি চিকিৎসকদের একাংশের। দমকল আধিকারিকদেরও বক্তব্য, কাচ ভেঙে আগুনকে শুধুমাত্র সিটি স্ক্যান-ইউএসজি ঘরের মধ্যে আটকে রাখার করণেই বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। আপাতত আগুন লাগার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে অকুস্থলে যাচ্ছে ফরেন্সিক টিম।
শুক্রবার এসএসকেএমের অ্যানেক্স হাসপাতাল পুলিশ হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক অঙ্কোলজি বিভাগের উদ্বোধন ছিল। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, প্রাথমিক ভাবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আগুন বলে মনে হচ্ছে না। অন্তর্ঘাত রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক তদন্তের পাশাপাশি ফায়ার অডিটের কাজ চলছে। তদন্ত রিপোর্ট এলেই আগুনের কারণ স্পষ্ট হবে। অগ্নিকাণ্ডের পরে পরিষেবা স্বাভাবিক করতে একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএসকেএম অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়।