কলকাতা: উচ্চ মাধ্যমিক নয়, মাধ্যমিক স্তর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের স্ট্রিম (কলা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান) বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, এমনই চিন্তাভাবনা করছে রাজ্যের নবগঠিত সিলেবাস কমিটি। কমিটির অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এমনই প্রস্তাবের কথা উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। তবে পুরো বিষয়টিই রয়েছে ভাবনার স্তরে। মেন্টরদের সঙ্গে আলোচনার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সিলেবাস কমিটি। বর্তমানে আইসিএসই বা সিবিএসই স্কুলগুলির পড়ুয়ারাও একইভাবে বিষয় বাছাই করে নিতে পারে নবম শ্রেণি থেকে। কিন্তু রাজ্যের বোর্ডগুলিতে সেই সুযোগ নেই। সব ঠিক থাকলে অদূর ভবিষ্যতে রাজ্য বোর্ডও সেই পথে হাঁটতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকার যে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে, তাতেও এই ধরনের প্রস্তাব ছিল। তবে রাজ্য সরকার অন্ধভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে চায় না। সেই শিক্ষানীতির পর্যালোচনার জন্য বিশেষ কমিটিও গড়েছে রাজ্য। সেই কমিটিই নতুন শিক্ষানীতি ও শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন আনার জন্য আলোচনা করবে। তাদের সুপারিশ মেনেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই বৈঠক করেছে রাজ্যের নবগঠিত কমিটির। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই নবম শ্রেণি থেকেই বিভাগ বিভাজনের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। সেখানে সদস্যরা তাঁদের মতামত জানাবেন। উপস্থিত থাকবেন শিক্ষাদফতরের আধিকারিকরাও। তারপর কমিটির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কর্তাদের সঙ্গে। এই প্রক্রিয়া শেষে শিক্ষাদফতরের সবুজ সঙ্কেত মিললেই সুপারিশ কার্যকর করার কথা ভাবা হবে।
নবম শ্রেণি থেকে বিষয়ধারা নির্বাচনের জন্য সিলেবাসে বদল আনাও প্রয়োজন। কারণ, যারা ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়, তাদের কলাবিভাগের বিষয়গুলি অত বিস্তারিত না পড়লেও চলে। আবার বাণিজ্য যাদের পছন্দের বিভাগ (স্ট্রিম), তারা কেনই বা পদার্থবিদ্যার খুঁটিনাটি পড়বে? তার চেয়ে নিজস্ব বিষয় নিয়ে ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করলেই কেরিয়ারে সুবিধা হবে বলে মত শিক্ষামহলের একাংশের। যদিও শিক্ষামহলের রক্ষণশীল শ্রেণি এটাকে কীভাবে গ্রহণ করে তা দেখার বিষয়।
২০২০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতির ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। তার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় দেশ জুড়ে। একাংশ নতুন শিক্ষানীতির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল। অনেক বিরোধী দলই এই শিক্ষানীতির বিপক্ষে সওয়াল করেন। তামিলনাড়ুর মতো পশ্চিমবঙ্গের শাসকও সরব ছিল নতুন নীতির বিরোধিতায়। তারই অঙ্গ হিসাবে বিকল্প শিক্ষানীতি গড়তে কমিটি গড়ে রাজ্য। এপ্রিল মাসে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়েছেন, রাজ্যের বিকল্প শিক্ষানীতিতে আপত্তি নেই কেন্দ্রের।