কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিশেষত শাসক দলের একাধিক নেতার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় এই ইস্যু এখন বিরোধীদের কাছে বড় হাতিয়ার। সেই সঙ্গে সামনে আসছে বিপুল শূন্যপদ, বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্নও। এবার পরিসংখ্যান তুলে শূন্যপদের সঙ্গে নিয়োগের ফারাক বোঝালেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। সম্প্রতি প্রাথমিক টেট পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই নিয়োগে শূন্যপদের সংখ্য়া ১১ হাজার ৭৬৫। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে সুজন চক্রবর্তী দাবি করেন, এ রাজ্যে সব মিলিয়ে শিক্ষক পদে মোট শূন্যপদের সংখ্যা অন্তত আড়াই লক্ষ। মাত্র ১১ হাজার নিয়োগ করলে তার ৪.৪ শতাংশ পূরণ হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সুজন চক্রবর্তী দাবি করেন, প্রাথমিকেই শূন্যপদের সংখ্যা অন্তত ১ লক্ষ বা তার কিছু বেশি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, একদিকে যেমন শূন্যপদের সংখ্যা কমানো হচ্ছে, অন্যদিকে যোগ্যতার নিরিখে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। ওই টেটে বসতে পারবেন ২০১৪-র ও ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। শুধু তাই নয়, ডিএলএডের পাশাপাশি বিএড পাশ হলেও বসা যাবে এই পরীক্ষায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সুজন জানান, বিধানসভায় প্রশ্নের উত্তরে ব্রাত্য নিজেই জানিয়েছিলেন, রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে শূন্যপদের সংখ্যা আড়াই লক্ষ। তাহলে মাত্র ১১ হাজার নিয়োগ কেন? সেই প্রশ্নই তুলে দিয়েছেন তিনি।
সুপার নিউমারিক পোস্ট অর্থাৎ যে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলেছেন সুজন। আদালতের নির্দেশে ওই সুপার নিউমারিক পোস্টের নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন সুজন চক্রবর্তী ব্যাখ্যা করেন, ওই শূন্যপদ আসলে তাদের জন্যই তৈরি করছিল সরকার, যাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বা যাঁদের বেআইনিভাবে চাকরি হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই পদে চাকরি পেলেও সেই চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাবে। উল্লেখ্য, আদালত এই নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর মামলাকারীদের আইনজীবী তথা বাম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর জন্য নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এমন কথাও বলছেন কেউ কেউ। এই নিয়োগ বেআইনি বলেই খারিজ করে দিয়েছে আদালত।