কলকাতা: সায়েন্স সিটিতে রাজ্য কমিটির বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক। আর সেই বিতর্ক দানা বাঁধতেই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠকে বসে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন শুভেন্দু। কিন্তু তাতেও ভিজল না চিঁড়ে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট বললেন, “শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য দল অনুমোদন করে না। শুভেন্দুর মন্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ”
রাজ্য কমিটির বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, “সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলব না, বন্ধ কর। রাষ্ট্রবাদী মুসলিম বলব না, সংখ্যালঘু মোর্চা চাই না, বলব না। ৫০ লক্ষ হিন্দুকে ভোট দিতে দেয়নি তৃণমূলের গুন্ডারা।” বিজেপির মঞ্চ থেকে এহেন কথা বলার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তাহলে ‘অন্য সুরে’ কথা বলছেন শুভেন্দু? তারপরই তড়িঘড়ি নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সাংবাদিক বৈঠকে বসেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী ও ভারত সরকারের স্লোগান সবসময় সবাইকে নিয়ে চলা এবং সবকা সাথ সবকা বিকাশ, এটাই NDA সরকার এর স্লোগান । এটা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। তৃণমূল স্তরে যেহেতু আমি কাজ করি।”
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচন ও বিধানসভার চারটে উপনির্বাচনে বিজেপির ফল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের সময়ে সংগঠন প্রসঙ্গে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, তিনি সংগঠনের দায়িত্বে নেই। তিনি রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। সংগঠন প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন, তাহলে কি হারের দায় ঝেড়ে ফেলছেন শুভেন্দু? সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কোনও দলের সংগঠন শক্তিশালী না দুর্বল, এটা বোঝার একটাই ফর্মুলা। যখন ক্ষমতায় আসব, তখন সংগঠন শক্তিশালী, যখন ক্ষমতায় থাকব না, সংগঠন দুর্বল। ভোট জিততে সংগঠনের ভূমিকা মাত্র ২৫ শতাংশ।” আর দলের সাংগঠনিক পদ নিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, “সাংগঠনিক পদ বলতে, সাংগঠনিক যে পদগুলো আমাদের রাজ্যে আসে, সেগুলোর কথাই হয়তো ওঁ বলতে চেয়েছেন। কিন্তু কোর কমিটির সদস্যও একটি সাংগঠনিক পদ।”
তবে শুভেন্দু বক্তব্যে যে বিজেপি অন্দরে জলঘোলা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে এনেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, “বিজেপির বিরোধী দলনেতা যদি বলে থাকেন সবক সাথ সবক বিকাশ তিনি চান না। সেটা তো সরাসরি নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা! এটা ভুয়ো বলেছিলাম আমরা। নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিজেপির ভেতর থেকে আস্থা উঠে গেছে। মোদিকে দলের ভেতর থেকে শুনতে হচ্ছে তার স্লোগান চলবে না। সূত্র থেকে শুনেছি, যিনি বলেছেন তিনি বকুনি খেয়েছেন। বিজেপির ভেতর থেকেই তীব্র সমালোচিত হয়েছেন। ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছেন পরে।”