কলকাতা: “মেধার প্রাপ্য দাবিতে আস্তাকুঁড়েতে ফেলে
মন্ত্রীরা সব কেজি দরে চাকরি করলেন বিলি।
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের হাহাকার কে চাপা দিতে,
দিদির নির্দেশে- সবাই উৎসবে-মেলায় এসো মেতে যাই চলি।।
ঢাক বাজিয়ে নেতা মন্ত্রী মহোদয়েরা,
সব রাস্তায় মিছিল করে।
একটা প্রজন্মের প্রতিভাবান প্রার্থীরা
এদিকে রাস্তায় বসে মরে।”
‘ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’র তালিকায় বাংলার দুর্গাপুজো স্থান পাওয়ায় যখন ইউনেস্কোকে (UNESCO) ধন্যবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার পথে নামল কলকাতা-সহ গোটা বাংলা ঠিক সময় ফেসবুকে এই কবিতাই শেয়ার করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Leader of Opposition Suvendu Adhikari)। প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2022) বিশেষ স্বীকৃতিপ্রাপ্তির উদযাপনেই এবার ১ মাসব্যাপী উৎসবে মেতেছে বাংলা। ডাক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তাঁর এই আগাম উৎসব যাপন নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানাতে শুরে করেছেন বিরোধীরা।
এদিকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে একাধিক ইস্যু নিয়ে প্রায়শই মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান শুভেন্দু। তোপ দাগেন রাজ্য-রাজনীতির নানা ইস্যু নিয়ে। তবে কবিতা? তা খুব একটা দেখা যায় না। এবার সেই শুভেন্দুই ফেসবুকে কবিতা শেয়ার করাতেই শুরু হয়েছে জোরদার চর্চা। কবিতাটি পোস্ট করে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “পুজোর স্বীকৃতি করে বিকৃতি, বেরোলো মিছিল রাজপথে/ মানুষ মুখ ফিরিয়েছে আজ; ভুলবেনা আর মেলায়, উৎসবে কোনোমতে।” এই কবিতাকে হাতিয়ার করেই এদিন রাজ্য-রাজনীতির একাধিক জ্বলন্ত ইস্যু নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করতে চেয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের।
মমতার মুখেও কবিতা
তবে কবিতা লেখার দৌড়ে বহু রাজনীতিককেই গুনে গুনে গোল দিতে পারেন মমতা। রয়েছে তাঁর কবিতার বইয়ের সংকলনও। এমনকী এদিন রেড রোডের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেও মমতার মুখে শোনা যায় কবিতার লাইন। মমতা বলেন, “আজ থেকে পুজো শুরু হয়ে গেল। ঢাকের বাদ্যি শুরু হয়ে গেল।” ঠিক এরপরেই নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ছন্দ মিলিয়ে বলেন, “টাকডু মাডুম টাকডু মাডুম, টাকডু মাডুম ডুম/ মা দুর্গা ঘরে এসেছে তাই তো এত ধুম। আনন্দের মধ্যে দিয়ে পুজো শুরু হল। যে যেমন ভাবে পারুন আনন্দ করুন। হৃদয়কে বড় করুন।“
তোপ সেলিমের
তবে মমতার এই উৎসব-উন্মাদনা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বাম নেতা মহম্মদ সেলিম। তাঁর দাবি, “লোকে টাকার পাহাড় দেখছে। প্রতিদিন অনুব্রত-পার্থর, তৃণমূলের নেতাদের, তাঁর নিজের পরিবারের সদস্যদের সমস্ত ফিরিস্তি বের হচ্ছে সংবাদে। সেখান থেকে তিনি দৃষ্টিটাকে সরিয়ে দিয়ে উৎসবে মাতিয়ে দিচ্ছেন। মদ দাও, ফূর্তি করো, সার্কাস করো। মানুষ ক্ষুধার্থ থাকুক, জিনিপত্রের দাম বাড়ুক, কর্মহীন থাকুক, অন্নহীন থাকুক, তার থেকে দৃষ্টিটা সরিয়ে দাও। এই যে বৈভব, এই যে আড়ম্বর এটা তো সংকীর্ণ রাজনীতির স্বার্থে। দুর্গা ঠাকুরের জন্য নয়। মানুষ এটা বুঝছেন। প্রতিবাদে নামছেন। আরও নামবেন।”
কটাক্ষ দিলীপের
আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূল জানে এই স্বীকৃতিটা লুঠে নিতে হবে। তিনি তিথি নক্ষত্র কিছু মানেন না। মহালয়ার আগেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেন। কোনও মন্ত্র শুদ্ধ বলতে পারেন না। কেবল রাজনীতি করেন। দুর্নীতি চাপা দেওয়ার জন্য ২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা খরচ করে মিছিল বের করা হচ্ছে। কিন্তু পাপ কোনওদিন চাপা পড়ে না। কিন্তু পাপ কোনও দিন চাপা পড়ে না। সিবিআই-ইডিকে আটকানো যাবে না। নেতাদের বাঁচানো যাবে না। জেলে যেতেই হবে।”