কলকাতা: ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর সপুত্র তৃণমূল ভবনে যেতে দেখা গিয়েছিল বর্ষীয়ান রাজনীতিক মুকুল রায়কে। তারপর থেকে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অনেক টানাপোড়েন হয়েছে। একদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী মামলার দীর্ঘ শুনানি হয়েছে বিধানসভায়। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ি থেকে মমতার মঞ্চে মুকুলের উপস্থিতি জল্পনা বাড়িয়েছে। তবে দলত্যাগ বিরোধী মামলায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রায় দিয়েছিলেন, মুকুল আছেন বিজেপিতেই। স্পিকারের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার শীর্ষ আদালতে সেই মামলা গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু নিজেই।
সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘স্পিকার তাঁর মতো করে রায় দিয়েছিলেন। আমরা মুকুল রায় সংক্রান্ত সবকিছু নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।’ সূত্রের খবর, শুভেন্দু নিজে এই মামলা করেছেন। আর তাঁর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করতে পারেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ এস বৈদ্যনাথন।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কৃষ্ণনগরের সভামঞ্চে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। স্পিকার বিজেপি বিধায়ক হিসেবে মুকুলকে চিহ্নিত করার পরও কীভাবে মমতার সভায় এলেন তিনি? এই প্রশ্ন উঠলে স্পিকার বলেন, ‘আমি যা বলার বলে দিয়েছি, কে বাইরে কী করছে তা দেখা সম্ভব নয়।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘কারও যদি উন্নয়ন নিয়ে কিছু বলার থাকে, তাহলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই পারেন।’
বিজেপির টিকিটেই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল রায়। পরে তৃণমূল ভবনে গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করতে দেখা যায় তাঁকে। এরপর বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মুকুলের নাম ঘোষণা হওয়ার পরই সরব হন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি ছিল, প্রথা অনুযায়ী এই পদ বিরোধীদেরই দেওয়া হয়। শাসক দলের যুক্তি ছিল, মুকুল রায় বিজেপি বিধায়ক বলেই তাঁকে এই পদ দেওয়া হয়েছে। এরপরই দলত্যাগ বিরোধী আইনে মামলা হয়। মুকুল কোন দলে, তা নিয়ে দীর্ঘ শুনানি হল। পরে স্পিকার রায় দেন, মুকুল আছেন বিজেপিতেই। ইতিমধ্যে পিএসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছেন মুকুল।
তবে তারপরও জটিলতা কাটেনি। ফের সেই ইস্যুতেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু। উল্লেখ্য, বর্তমানে আরও চার বিধায়কের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী মামলার শুনানি চলছে। কৃষ্ণ কল্যাণী, বিশ্বজিৎ দাস, তন্ময় ঘোষ, সৌমেন রায়ের নামে চলছে ওই মামলা।