Suvendu Adhikari: ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলব না’, বিজেপির সভাতেই অন্য সুর শুভেন্দুর

Sayanta Bhattacharya | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jul 17, 2024 | 4:42 PM

Suvendu Adhikari: শুভেন্দু নিজেই বলেন, "চুলচেরা বিশ্লেষণের দরকার আছে । উত্তরবঙ্গ, বাঁকুড়ার আসন হারবো এ আমি ভাবিনি ।" ভোটের আগে  ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি নেওয়া। ঘোষিতভাবে তা বিজেপির কর্মসূচি না হলেও, বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের বক্তব্য, পুরনো লাইনেই খেলেছে পদ্ম শিবির।

Suvendu Adhikari: সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলব না, বিজেপির সভাতেই  অন্য সুর শুভেন্দুর
সায়েন্স সিটিতে শুভেন্দু অধিকারী
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: “সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলব না, বন্ধ কর। রাষ্ট্রবাদী মুসলিম বলব না, সংখ্যালঘু মোর্চা চাই না, বলব না।” সায়েন্স সিটিতে বিজেপির মহাবৈঠকে বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর। শুভেন্দু স্পষ্ট বললেন, “সবকা সাথ সবকা বিকাশ বন্ধ কর। রাষ্ট্রবাদী মুসলিম চাই না। সংখ্যালঘু মোর্চা চাই না। যে আমাদের সাথে, আমি বা আমরা তাদের সাথে। ভোটের আগে অনেক বলেছি রাষ্ট্রবাদী মুসলিম। কিন্তু আর নয়। যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে, তাদের সঙ্গে আমরা থাকবো।”

লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। কেন বিপর্যয়, কোথায় খামতি? অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলেছেন, নির্বাচনে তৃণমূল বিগত কয়েক বারের মতো বাঙালি অস্মিতাকেই হাতিয়ার করেছিল। আর বিজেপির তাস ছিল হিন্দুত্ব। ফলে মেরুকরণের ভোট অঙ্ক বাংলায় মেলাতে পারেনি পদ্ম শিবির। এরপর ভোটের ফল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে বুধবার সায়েন্স সিটিতে বসেছে রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠক। এই বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়েই বিস্ফোরক কথা বললেন শুভেন্দু।

শুভেন্দু বুধবার বলেন, “বিজেপি বাংলায় অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে ২ কোটি ৩৩ লক্ষ ভোট পেয়েছে। তৃণমূলের জিহাদি জঙ্গিরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে উনিশের পর বুথ স্তরের সংগঠনকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল অত্যাচার করে। এক লক্ষের বেশি আমাদের বুথে বসা ছেলে পালিয়ে ছিল রাজ্য ছেড়ে। তারপর আমরা চেষ্টা করে তাদের রাজ্যে এনেছি। সফল নবান্ন অভিযান করেছি, বিধানসভার ভিতরে বাইরে লড়াই করেছি ।”

শুভেন্দু এদিন আরও বলেন, “চুলচেরা বিশ্লেষণের দরকার আছে । উত্তরবঙ্গ, বাঁকুড়ার আসন হারব এ আমি ভাবিনি ।” ভোটের আগে  ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ঘোষিতভাবে তা বিজেপির কর্মসূচি না হলেও, বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরনো লাইনেই খেলেছে পদ্ম শিবির। কিন্তু তাতেও এ রাজ্যে কাজ হয়নি। সংখ্যালঘু ভোটের প্রায় পুরোটাই গিয়েছে জোড়াফুল থলিতে। বুধবার শুভেন্দুর বিস্ফোরক অভিযোগ,  “৫০ লক্ষ হিন্দুকে ভোট দিতে দেয়নি তৃণমূলের গুন্ডারা”।

কিন্তু, সবকা কা সাথ, সবকা বিকাশ তো প্রধানমন্ত্রী মোদীর মুখের স্বীকৃত স্লোগান। তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারী সোচ্চারে বিজেপির সর্বোচ্চ নেতার দেখানো পথের পথের বাইরে হাঁটতে চাইছেন? এতে করে কি বাংলায় নির্বাচনী ভাগ্য ফিরবে পদ্ম-পার্টির, প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরেরই অন্দরে। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “আসলে এটাই শুভেন্দু অধিকারীর চরিত্র। ও আসলে কারোর নয়। ও আসলে বিজেপিরও নয়। ও কেবল নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিজেপিতে গিয়েছে। দিলীপ ঘোষকে হারিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারী তো নরেন্দ্র মোদীর কথার অমান্য করছে।” যদিও শুভেন্দু নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের যে স্লোগান সব কা সাথ সাবকা বিকাশ সেটা তেমনি আছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল যেহেতু এটা তাই আমি আমার বক্তব্য বলেছি। এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর স্লোগানকে মেলাবেন না দয়া করে। শেষ লোকসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে আমি এ কথা বলেছি।”

অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপির বিরোধী দলনেতা যদি বলে থাকেন. সবকা সাথ সবকা বিকাশ তিনি চান না, সেটা তো সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা! এটা ভুয়ো বলেছিলাম আমরা। নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিজেপির ভেতর থেকে আস্থা উঠে গেছে। মোদীকে দলের ভেতর থেকে শুনতে হচ্ছে তাঁর স্লোগান চলবে না। সূত্র থেকে শুনেছি, যিনি বলেছেন তিনি বকুনি খেয়েছেন। বিজেপির ভেতর থেকেই তীব্র সমালোচিত হয়েছেন। ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছেন পরে।”

Next Article