কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির ইস্যুতে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছি। পাহাড় প্রমাণ নোটের পাহাড়। ইডির সন্দেহ এই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। আর এরই মধ্যে ঘুরেফিরে আসছে সারদা ইস্যু। বিশেষ করে শাসক দল তৃণমূলের থেকে বার বার ওয়াশিং মেশিন তত্ত্ব তুলে ধরা হচ্ছে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কেন শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা… বিগত কিছুদিনে বার বার এমন কথা বলতে শোনা গিয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে। এবার তার পাল্টা জবাব দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা বলেন, “২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর শ্যামবাজারের এক জনের ফ্ল্যাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর এবং দুইজন বর্ষীয়ান সাংসদ আমার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। সেদিন আমার হাত-পা ধরা হয়েছিল, যাতে আমি ওদের সঙ্গ না ছাড়ি। তারপর ৩ ডিসেম্বর জেল হেফাজতে থাকা সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে একটি চিঠি লেখানো হয়েছিল। সেখানে আমি ওদের শত্রু, আমার নাম তো ছিলই। সিপিএম বিরোধী দল বলে বিমান বসুর নাম রেখেছিল, সুজন চক্রবর্তীর নাম রেখেছিল। অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নাম রেখেছিল। মুকুল রায় যেহেতু ভিতরে ভিতরে যোগাযোগ রাখতেন, তাই তাঁর নাম রেখেছিলেন, কিন্তু বলেছিলেন, তিনি কত টাকা নিয়েছিলেন, তা মনে পড়ছে না।”
এরপর শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “এই চিঠির পরে ৯ ডিসেম্বর একটি চিঠি আমি সিবিআই ডিরেক্টরকে লিখেছিলাম। কারণ, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই মামলাগুলি সিবিআই এবং আর্থিক দুর্নীতিতে ইডির বাইরে এই চিটফান্ড মামলায় আর কেউ ঢুকতে পারে না। ওই চিঠিতে আমি জানিয়েছিলাম, পীয়ূষ পাণ্ডে নামে এক আইপিএস, যিনি তখন জেল আধিকারিক ছিলেন, তাঁকে দিয়ে এটি করানো হয়েছিল।” ওই ঘটনার জন্য কুণাল ঘোষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এক আইনজীবীর দিকেই আঙুল তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর বক্তব্য়, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর ৩ ডিসেম্বর ওই চিঠি (সুদীপ্ত সেনের চিঠি) লেখা হয়েছিল। আর শুভেন্দু বাবু সিবিআইকে চিঠি দিয়েছিলেন ৯ ডিসেম্বর। অর্থাৎ, যে অভিযোগ তৃণমূল তুলছে, সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দুর সাফ কথা, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার জন্য ১৮-১৯ মাস আগে তিনি নিজেই আবেদন করেছিলেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, তাঁর প্যান কার্ড নম্বর এবং আয়করের হিসেব জনসমক্ষে রয়েছে। তাঁর সেই তথ্য এবং জীবনযাত্রার মানে যদি কোনও গরমিল থাকে, তাহলে আর্থিক দুর্নীতির আইনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।